শনিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

কারখানা মালিকদের কাছে জিম্মি চা চাষিরা

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

চায়ের নায্যমূল্যের দাবিতে কয়েক মাস ধরে আন্দোলন করছেন পঞ্চগড়ের ক্ষুদ্র চা-চাষিরা। সম্প্রতি মহাসড়কে কাঁচা চা পাতা ফেলে চা কারখানাগুলোর বিরুদ্ধে কয়েকবার প্রতিবাদ জানিয়েছেন তারা। স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে স্মারকলিপিও দিয়েছেন জেলা প্রশাসক বরাবর। ক্ষুদ্র চা-চাষিদের অভিযোগ, ব্রিটিশ আমলের নীলকরদের মতো কারখানা মালিকরা তাদের জিম্মি করে ফেলেছেন। নিজেদের বাগানে উৎপাদিত পাতার ৫০-৬০ ভাগই কারখানা মালিকদের বিনা টাকায় দিতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। অন্যদিকে কাঁচা চা পাতার মূল্য কেজিপ্রতি মাত্র ২০ টাকা দেওয়ায়ও হতাশ কৃষক। কারখানা কর্তৃপক্ষ বলছেন, কৃষকের এই দাবি অযৌক্তিক। তাদের ভাষ্য, যে হারে চা উৎপাদন হচ্ছে সেই তুলনায় কারখানা গড়ে না ওঠায় সমস্যায় পড়েছেন কৃষকরা। সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, চা চাষে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছেন পঞ্চগড়ের চাষিরা। তারা বলেন, পুরো পঞ্চগড়ে মাত্র ছয়টি চা-কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে সচল চারটি। যেখানে আরও অন্তত ১৫/২০টি কারখানা দরকার। প্রক্রিয়াজাতকরণে ছয় কারখানার তুলনায় তিনগুণ পাতা উৎপাদন হচ্ছে। এ সুযোগে কারখানা মালিকরা পাতার দাম অর্ধেকেরও কম দিচ্ছেন। বাংলাদেশ চা বোর্ডের পঞ্চগড় আঞ্চলিক অফিসের কর্মকর্তা সুমন শিকদার জানান, এ জেলায় চায়ের আবাদ দিন দিন বাড়ছে। কিন্তু সেই তুলনায় কারখানা হচ্ছে না। সেজন্য কারখানা মালিকরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এ কাজটি করছেন। পঞ্চগড় আঞ্চলিক চা বোর্ড অফিসের তথ্যমতে, গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলায় বড় বাগানে চা আবাদের জমির পরিমাণ ছিল দুই হাজার ৩২০ একর। ক্ষুদ্রায়তন বাগানে চা চাষ হয়েছে ২৫০ একর এবং ৪৮৩ একর জমিতে রয়েছে ৪৮৩টি ক্ষুদ্র চা বাগান। অথচ পঞ্চগড়ে ক্ষুদ্র চা চাষের উপযোগী জমি আছে প্রায় ২০ হাজার একর। প্রতিবছর চায়ের আবাদ বাড়লেও সে তুলনায় কারখানা গড়ে উঠছে না। জেলা প্রশাসক অমল কৃষ্ণ জানান, বেসরকারিভাবে টি-বোর্ড আরও দুটি এবং প্রধানমন্ত্রী পঞ্চগড়ে একটি সরকারি চা কারখানা করার অনুমোদন দিয়েছেন। এই কারখানাগুলো স্থাপন হলে ক্ষুদ্র চাষিদের সমস্যা থাকবে না।

সর্বশেষ খবর