মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

প্রচণ্ড কম্পনে বাড়িঘরে ফাটল খাবার পানির তীব্র সংকট

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি এলাকা

দিনাজপুর প্রতিনিধি

পার্বতীপুরের বড়পুকুরিয়া খনির অধিগ্রহণ এলাকার বাইরের কয়েক গ্রামের ঘরবাড়ি যখন-তখন প্রচণ্ড ঝাঁকুনিতে কেঁপে উঠছে। দেখা দিচ্ছে নতুন করে ফাটল। খবার পানির সংকট তো রয়েছেই। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে গ্রামবাসীর মধ্যে। বিষয়টি খনি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে জানান স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ছাদেকুল ইসলাম। খনির এমডির ভাষ্য, এ ধরনের সমস্যা হলে সমাধান করা হবে। স্থানীয়রা জানান, কয়লা খনির অধিগ্রহণকৃত এলাকার বাইরে বাঁশপুকুর, কাজিপাড়া, বৈদ্যনাথপুর, শিবকৃষ্ণপুর বৈগ্রাম, কাশিয়াডাঙ্গা পাতিগ্রাম পাচঁঘরিয়া ও কালুপাড়া গ্রামের বাসীন্দারা আতঙ্কে বসবাস করছেন। রাতে-দিনে যখন-তখন এলাকায় প্রচণ্ড কম্পন হচ্ছে। নতুন নতুন এলাকার ঘরবাড়িতে দেখা দিচ্ছে ফাটল। এছাড়া ভূ-গর্ভস্থ থেকে পানি সেচ দেওয়ায় পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। অচল হয়ে পড়েছে এলাকার গভীর নলকূপগুলো। এ কারণে দেখা দিয়েছে খাবার পানির সংকট। পাচঘরিয়া গ্রামের শাহিন চীেধুরী জানান, কয়লা খনির কারণে বাড়ি-ঘর ফেটে গেলেও খনি কর্তৃপক্ষ এলাকা এখনো অধিগ্রহণ করে নাই। এগিয়ে আসেনি প্রশাসনের কেউ। এই গ্রামে বিদ্যুৎ নেই, খাবার পানি সংকট। সব সময় মানুষ আতঙ্কে দিন কাটান। ইউপি সদস্য মেহেরুল ইসলাম জানান, যখন ভূমিকম্পের মতো কেঁপে উঠে তখন নির্ঘুম রাত কাটাতে হয় অনেককে। শিবরামপুর গ্রামের আব্দুল জব্বার বলেন, ‘ঘরবাড়ি ও মাটিতে ফাটল কয়েক মাস আগে থেকে দেখা গেলেও সমপ্রতি গ্রামের পুকুর-ডোবার পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। টিউবওয়েলে পানি উঠে না।’ ফাটলের বিষয়টি নিশ্চিত করে স্থানীয় হামিদপুর ইউপি চেয়ারম্যান ছাদেকুল ইসলাম জানান, এলাকাবাসী কয়লা উত্তোলনের বিরোধিতা করেন না, কিন্তু ঘরবাড়িতে ফাটল দেখা দেওয়া ও পানি সংকটের বিষয়টি সরকারকে দেখতে হবে। বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএমসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএম আওরঙ্গজেব জানান, গ্রামবাসীর দাবির বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, বড়পুকুরিয়া খনি থেকে কয়লা উত্তোলনের কারণে এর আগে হামিদপুর ইউনিয়নের জিগাগাড়ি, কালুপাড়া, পাতিগ্রাম, বাঁশপুকুর, বৈদ্যনাথপুর, বৈগ্রামের বহু ঘর-বাড়িতে ফাটল ও ভূমিধসের সৃষ্টি হয়। ২০১৪ সালে খনি কর্তৃপক্ষ ওই এলাকার ৬৪৬ একর ভূমি অধিগ্রহণ করে। যেখানে বসতবাড়িও রয়েছে। কয়লা উত্তোলন শুরুর পর আশপাশের এলাকায় ছাইয়ের সৃষ্টি হয় এবং ভূমিতে দেখা দেয় ফাটল। এরপর সরকার ওই এলাকার মানুষকে ক্ষতিপূরণ দিয়ে অন্য স্থানে সরানোর সিদ্ধান্ত নেয়। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ২০১০ সালে একনেকে ১৯১ কোটি টাকার একটি প্রকল্পও অনুমোদন করা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর