বুধবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

১৮১ প্রতিবন্ধী বিধবা বৃদ্ধের ভাতা আত্মসাৎ

পার্বতীপুর প্রতিনিধি

দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার বেলাইচন্ডি ইউনিয়নে তালিকাভুক্ত ১৮১ প্রতিবন্ধী, বয়স্ক ও বিধবার ভাতা বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। এদের মোট ভাতার ৯ লাখ ৬১ হাজার টাকার মধ্যে সাত লাখ ২০ হাজার সংশ্লিষ্টরা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় এমপি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী অ্যাড. মোস্তাফিজুর রহমান বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি টাকা ফেরত দিতে ইউএনওকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। অভিযোগ তদন্তে ৩ ডিসেম্বর ভাতাভোগীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে উপজেলা পরিষদে ডাকা হয়েছে।

জানা যায়, বেলাইচন্ডি ইউনিয়নে ২০১৫ সালের জুলাইয়ে মাসিক ভাতাভোগীর আওতায় নতুন ১৮১ প্রতিবন্ধী, বয়স্ক ও বিধবা তালিকাভুক্ত হয়। সমাজসেবা অধিদপ্তরের নির্দেশনা পেয়ে সোনালী ব্যাংক হুগলীপাড়া শাখা পার্বতীপুর গত ২১ নভেম্বর প্রথমবারের মতো তাদের ২০১৫ সালের জুলাই থেকে গত জুন পর্যন্ত ১২ মাসের ভাতা একসঙ্গে প্রদান করে। নিয়মানুযায়ী ভাতাভোগী ব্যাংকে উপস্থিত হয়ে বই প্রদর্শন করবেন এবং ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তা যাচাই করে টাকা দেবেন। কিন্তু ইউএনওর নির্দেশে ব্যাংকের লোকজন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক বেলাইচন্ডি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদের বাড়ি কৈপুলকী গ্রামে গিয়ে ভাতাভোগীদের টাকা প্রদান করেন। সূত্র জানায়, প্রতিবন্ধীদের মাসিক ভাতা ৫০০ টাকা হিসাবে এক বছরে ছয় হাজার প্রদানের স্বাক্ষর নেওয়া হয়। কিন্তু তাদের দেওয়া হয়েছে দেড় হাজার করে। একইভাবে বয়স্ক ও বিধবাদের মাসিক ৪০০ টাকা হিসাবে এক বছরে চার হাজার ৮০০ টাকা প্রদানের স্বাক্ষর নিয়ে প্রদান করা হয় এক হাজার ২০০ টাকা। বাকি টাকা ইউএনও, সাবেক চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ, সমাজসেবা ও ব্যাংক কর্মকর্তা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। টাকা প্রদানকালে ইউএনও ও সমাজসেবা কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

বেলাইচন্ডি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ফজির উদ্দিন জানান, অনেকের কাছে তিনি বিষয়টি শুনেছেন। ইউএনওর সম্মতি ছাড়া কোনো অবস্থাতেই কারো বাড়ি বসে ব্যাংকের লোক টাকা বিতরণের সাহস পেতো না। এ অপকর্মের জন্য ইউএনও দায়ী বলে তিনি মনে করেন। সোনালী ব্যাংক হুগলীপাড়া শাখার ম্যানেজার রেজওয়ানুল হক জানান- ইউএনওর নির্দেশে সাবেক চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদের বাড়িতে টাকা প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়। প্রাপ্য সমুদয় টাকা প্রত্যেকের হাতে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন টাকা প্রদানকারী ব্যাংক কর্মকর্তা মিজানুর রহমান। ইউএনও মাহমুদুর রহমান জানান, ব্যাংকের লোকজনের উপস্থিতিতে তিনি টাকা বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করে সেখান থেকে চলে আসেন। কম দেওয়ার বিষয়টি মন্ত্রীর কাছ থেকে জানেছেন।

সর্বশেষ খবর