শনিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

পূর্বাঞ্চলীয় রেলের জমি বরাদ্দে অনিয়ম

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি

বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলীয় জোনের ঢাকা এস্টেট বিভাগের জমি লিজ প্রদানে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। চলতি বছর পর্যন্ত পূর্বাঞ্চলীয় জোন থেকে বিভিন্ন ব্যক্তির নামে এক হাজার ৪৩১ একর জমি লিজ দেওয়া হয়েছে। রেল লাইনের দুই পাশের জমি কৃষি, বাণিজ্যিক, নার্সারি ও জলাশয় এই চার ক্যাটাগরিকে লিজ দেওয়া হয়ে থাকে। সম্প্রতি চারটি অভিযোগ তদন্ত করে চার একর জমি অবৈধভাবে লিজ দেওয়ার সত্যতা পেয়েছে এস্টেট বিভাগ।

এস্টেট বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভিতর রেল লাইনের উভয়পাশের ১.২৮ একর টিলা ভূমি নীতিমালা লঙ্ঘন করে কৃষি লাইসেন্স প্রদান করা হয়। টঙ্গী-ভৈরব ডাবল লাইন নির্মাণের সময় গাজীপুরের কালিগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধা কমল বিধান রোজারিওসহ গ্রামের সাতজনের ০.৬৪ একর জমি অধিগ্রহণ করেছিল রেল বিভাগ। ডাবল লাইন নির্মাণের পর অবশিষ্ট জমি আবেদন করেও লিজ পাননি ওই খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোকেরা। নীতিমালা না মেনে ওই জমির কৃষি লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে অন্য গ্রামের লোকদের। নরসিংদী-মদনগঞ্জ সেকশনে সাবেক নয়াপুর স্টেশন এলাকায় আনছার আলীর ০০.৪২ একর জমি থেকে ২০১৩ সালে লাইসেন্স ওভারল্যাপিং করে সম্পূর্ণ অনৈতিকভাবে জনৈক নূরুল ইসলামের নামে ০.০৮ একর কৃষি লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। এছাড়া একই লাইনের সাবেক কুড়িপাড়া স্টেশন এলাকায় বিভিন্ন দাগে ১.৮৫ একর রেলভূমি ২০১৪ সালে কৃষি লাইসেন্স দেওয়া হয় একটি প্রতিষ্ঠানকে। এ কোম্পানি কৃষি লাইসেন্স নিয়ে ওই জমিতে আধাপাকা ভবন ও চৌহদ্দি টিনের বেড়া দিয়ে কন্টেইনার পোর্ট নির্মাণ করছেন। এ বিষয়টি গত ২৮ জুন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক নিজেই টেলিফোনে এস্টেট বিভাগকে জানান।

এস্টেট অফিসার এসএম রেজাউল করিম বলেন, ‘জমি অবৈধভাবে লিজ দেওয়ার অভিযোগ পেয়ে আমি মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে তদন্ত করি। দেখতে পাই অবৈধভাবে জমি লিজ প্রদানের জন্য সহকারী এস্টেট কর্মকর্তা কাজী মো. হাবিবুল্যাহ আবেদকারীদের পক্ষে সুপারিশ করেছেন। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষকে সুপারিশ করা হয়েছে। সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মিহির কুমার জানান, সংরক্ষিত বনের কোনো জমি লিজ দেওয়ার নিয়ম নেই। লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভিতর রেল লাইনের পাশের জমি লিজ দেওয়ার খবর পেয়ে রেল মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করি। পরবর্তীতে ওই লিজ বাতির করা হয়। কাজী মো. হাবিবুল্যাহ বলেন, ‘আমি সুপারিশ করেছি বলেই কি অপরাধী হয়ে গেলাম। আসলে এস্টেট বিভাগ থেকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। মাঠপর্যায়ে গিয়ে এ তদন্তের সত্যতা পাওয়া যাবে না।’ বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (পূর্ব) আব্দুল হাই বলেন, কারো বিরুদ্ধে অনিয়ম করে জমি লিজ দেওয়ার অভিযোগ থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে বিষয়টি এখনো আমার নলেজে আসে নাই।’

সর্বশেষ খবর