বৃহস্পতিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

জার্নাল বুক সংকটের নামে গ্রাহক হয়রানি, রেজিস্ট্রিতে বাড়তি ফি

শ্রীপুর উপজেলার ডাকঘর

মাহবুবুর রহমান, শ্রীপুর (গাজীপুর)

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা প্রধান ডাকঘরসহ ১২টি শাখা অফিসে জার্নাল বুক (রেজিস্ট্রি বই) সংকটের নামে গ্রাহক হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। চিঠি রেজিস্ট্রি থেকেও আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত ফি। তাছাড়া জনবল এবং অবকাঠামো সংকট রয়েছে প্রধানসহ শাখা ডাকঘরগুলোতে। জানা যায়, শ্রীপুরে পাঁচ শতাধিক রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে আছে গার্মেন্ট, সিরামিক, সাইকেল কারখানা, পলি কারখানা ও প্লাস্টিক কারখানা। প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে প্রতি মাসে শত শত চিঠি রেজিস্ট্রি করা হয়। পৌরসভার বেড়াইদেরচালার ‘এসকিউ সেলসিয়াস লিমিটেডের’ পিয়ন সুজন জানান, উপজেলা প্রধান ডাকঘর থেকে এক সঙ্গে ২০টির বেশি চিঠি রেজিস্ট্রি করা যায় না। চিঠিপ্রতি রেজিস্ট্রি ফি ১০ টাকা দিতে হয়। অথচ রসিদ দেওয়া হয় ৭ টাকার। ‘প্যাশন মেকারস’ কারখানার কমপ্লায়েন্স অফিসার মাকসুদুর রহমান জানান, শ্রীপুর প্রধান ডাকঘরে বেলা ১২টার পর গেলে রানার আব্দুল খালেক বলেন, ‘১২টার পর কোনো চিঠি রেজিস্ট্রি হয় না। তাছাড়া ২০টির বেশি চিঠি রেজিস্ট্রি করার এখতিয়ার তাদের নেই। উপর থেকে আপনারা অনুমতি আনতে পারলে আমাদের রেজিস্ট্রি করতে কোনো সমস্যা নেই।’ গ্রাহকরা জানান, রানার আব্দুল খালেকই প্রধান ডাকঘরে রাজস্ব টিকিট বিক্রি, চিঠি রেজিস্ট্রেশন করেন। এ ক্ষেত্রে গ্রাহকের কাছ থেকে নেন অতিরিক্ত ফি। সরকারি সেবার গুরুত্বের কারণে গ্রাহকরা বাধ্য হয়ে দুর্ভোগ মাথা পেতে নেন। পোস্ট মাস্টার পারভীন আক্তারও গ্রাহকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। আব্দুল খালেক বলেন, ‘উপরের কর্মকর্তারা চেয়ারে বসে ঘুষ খায়। চাহিদানুযায়ী জার্নাল বুক চাইলে তারা দেন না। ফলে উপজেলা প্রধান ডাকঘরসহ শাখাগুলোর কর্মীরা পড়েন বিড়ম্বনায়। যেসব পোস্ট অফিস থেকে কর্মকর্তাদের ঘুষ দেওয়া হয় সেখানে চাহিদানুযায়ী জার্নাল বুক সরবরাহ করেন।’ দরিদ্র তহবিলের জন্য রেজিস্ট্রি চিঠিতে অতিরিক্ত তিন টাকা নেওয়া হয় বলেও জানান খালেক। পোস্ট মাস্টার পারভীন আক্তার অভিযোগের ব্যাপারে মন্তব্য করতে রাজি হননি। শ্রীপুর প্রধান ডাকঘরের পোস্টাল অপারেটর শরীফ হোসেন জানান, মাসে ৪০০ জার্নাল বুকের জন্য আবেদন করলে মাত্র দেড়শ সরবরাহ করা হয়। উপজেলা প্রধান ডাকঘরে তিনজন পোস্টাল অপারেটরের স্থলে একজন, তিন পোস্টম্যানের স্থলে একজন, দুজন রানার ও একজন পোস্ট মাস্টার রয়েছেন। ১২টি শাখা ডাকঘরেও আছে জনবল সংকট। গাজীপুরের পোস্টাল পরিদর্শক রাজন ভূষণ জানান, ডাকঘরে চাহিদানুযায়ী জার্নাল বুক সরবরাহ করা হয়। রেজিস্ট্রি চিঠি পাঠানোর নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই। অফিস সময় পর্যন্ত রেজিস্ট্রি করা যায়। দরিদ্র তহবিল নেই। তবে ঘুষের অভিযোগ সঠিক নয়।

সর্বশেষ খবর