বৃহস্পতিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

পুলিশের বাণিজ্যে ‘ডাকাতি মামলা’

রেহাই পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ

রাহাত খান, বরিশাল

বরিশালের উজিরপুর উপজেলার হারতা বাজারে গণডাকাতির মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যাপক বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, এভাবে বাণিজ্যের ফাঁদ পেতে নিরীহ সাধারণ মানুষ আটক করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতানো হচ্ছে। এ থেকে রেহাই পাচ্ছেন না বাদাম বিক্রেতা, দিনমজুর এবং টেইলার্স শ্রমিক থেকে শুরু করে কেউই।

অভিযোগ অনুযায়ী, ডাকাতির ঘটনায় সন্দেহজনকভাবে একাধিক ব্যক্তিকে আটক করা হলেও অর্থের বিনিময়ে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হচ্ছে ‘সন্দেহজনক ঘোরাফেরা’ অর্থাৎ ৩৪ ধারায়। এমনকি সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী কোনো আটক ব্যক্তিকে ২৪ ঘণ্টার বেশি থানা হেফাজতে না রাখার বিধান থাকলেও দাবিকৃত টাকা না পেয়ে আটকের ৪৪    ঘণ্টা পর পর্যন্তও আদালতে সোপর্দ     করার অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, গত ২২ নভেম্বর সন্ধ্যায় হারতা বাজারের ১৬টি মাছের আড়তে ফিল্মিস্টাইলে গুলি করে বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে প্রায় কোটি টাকা লুট করে দুটি স্পিডবোট যোগে পালিয়ে যায় ১০-১২ জন সশস্ত্র দুর্বৃত্ত। গুলি বোমার শব্দে বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি সোহরাব বেপারীর মৃত্যু ঘটে এবং দুর্বৃত্তদের পিটুনিতে ও দিগ্বিদিক দৌড়াদৌড়িতে অন্তত ২০ জন আহত হন। এর পরদিন বাজার কমিটির সভাপতির ছেলে দুলাল বেপারী খোকন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে উজিরপুর থানায় একটি মামলা করেন। অভিযোগ অনুযায়ী, হারতা বাজারে ডাকাতির সুযোগে পুলিশের কিছু অসাধু কর্মকর্তা নিরীহ মানুষকে ধরে বাণিজ্য শুরু করেছেন। এ বিষয়ে এক অনুসন্ধানে জানা গেছে, উজিরপুর থানার এসআই তৌহিদ এবং এসআই জসিম গত রবিবার সন্ধ্যায় উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের কালীহাতা গ্রামের নাদের মোল্লার ছেলে বাদাম বিক্রেতা সেকান্দার মোল্লা এবং টেইলার্স শ্রমিক হুমায়ুন হাওলাদারকে আটক করেন। সেকান্দারের অভিযোগ, তাদের থানায় নিয়ে ‘হারতা বাজারে ডাকাতি মামলায় ঢুকিয়ে দেওয়া হবে’ বলে ভয় দেখাতে থাকেন তৌহিদ ও জসিম। অভিযোগের ব্যাপারে বরিশালের পুলিশ সুপার এস এম আক্তারুজ্জামান গতকাল বলেন, নিরীহ মানুষ ধরে ডাকাতি মামলায় ঢুকিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগ সত্য হলে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত  ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর