বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

চার সপ্তাহে ছয় গ্রাম যমুনায় বিলীন

সিরাজগঞ্জের চৌহালী

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

করালগ্রাসী যমুনা নদীর ভাঙনে সিরাজগঞ্জের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলা। প্রতিবছর ভাঙতে ভাঙতে ইতিমধ্যে অর্ধেকের বেশি এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এ বছর অসময়ে আবারও শুরু হয়েছে ভাঙন। গত চার সপ্তাহে উপজেলার ছয়টি গ্রাম বিলীন হয়েছে। ভাঙন কবলিতরা পার্শ্ববর্তী জেলা টাঙ্গাইলে আশ্রয় নিচ্ছেন। ভাঙনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে উপজেলাটি সিরাজগঞ্জ জেলার মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবার পাশাপাশি মানবিক বিপর্যয়ে পড়বে বহু মানুষ। এদিকে উপজেলার প্রশাসনিক সব কার্যক্রম সিরাজগঞ্জ জেলায় হলেও নদী শাসন কার্যক্রম টাঙ্গাইল পাউবো’র অধীনে থাকায় ভাঙন প্রতিরোধে নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে বলে জেলা প্রশাসন বলছে।

জানা যায়, ১৮৪৫ সালে বৃহত্তর মোমেনশাহী জেলার অধীনে জামালপুর ও সিরাজগঞ্জ নামে দুটি মহকুমার সৃষ্টি করা হয়। ১৮৫৫ সালে যমুনা নদীর গতিপথ পরিবর্তনের কারণে সিরাজগঞ্জ মহকুমাকে পাবনা জেলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৯৮৪ সালে সিরাজগঞ্জ জেলা হিসেবে স্বীকৃতি পায়। যমুনা নদীর কারণে সিরাজগঞ্জ থেকে চৌহালী উপজেলা বিভক্ত ছিল।  পূর্বপাড়ে চৌহালী ও পশ্চিমপাড়ে এনায়েতপুর দুটি থানা নিয়ে গঠিত উপজেলার আয়তন ছিল ২০২ বর্গমাইল। দুই প্রান্তই  যমুনার তীরবর্তী হওয়ায় ভাঙনের ফলে ইতিমধ্যেই প্রায় ১৫০ বর্গমাইল বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনে উপজেলা সদর, প্রায় ৮২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল থানা কার্যালয়, ফসলি জমি ও বাপ-দাদার পৈতৃক ভিটাসহ বহু সরকারি-বেসরকারি অফিস নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে। জমি-জমা ও পৈতৃক বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে হাজার হাজার মানুষ।  বাঘুটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান কাহহার সিদ্দিকী জানান, অসময়ের ভাঙনের কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ প্রায় শতাধিক বসতভিটা বিলীন হয়ে গেছে। সরকার থেকে কোনো সহায়তা দেওয়া হয়নি ভাঙন কবলিতদের। অনেকে ওয়াপদা বাঁধসহ বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। তিনি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড যদি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তবে উপজেলার বাকি অংশটুকুই হারিয়ে যাবে। ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন শেষে সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক কামরুননাহার সিদ্দিকা জানান, প্রশাসনিক কার্যক্রম সিরাজগঞ্জের অধীনে। কিন্তু নদী শাসনের কাজটি টাঙ্গাইল পাউবো দেখভাল করে। এ কারণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে নানা জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে। তবে আলোচনার মাধ্যমে খুব দ্রুত ভাঙনরোধে উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

সর্বশেষ খবর