রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

দখল হয়ে যাচ্ছে শরীয়তপুর শহরের পাঁচ খাল

শরীয়তপুর প্রতিনিধি

দখল হয়ে যাচ্ছে শরীয়তপুর  শহরের পাঁচ খাল

বালু দিয়ে ভরাট করা হয়েছে খাল —বাংলাদেশ প্রতিদিন

শরীয়তপুর জেলা শহরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া পাঁচটি খাল দখল করে ভরাট করা হচ্ছে। এসব খালের জায়গায় নির্মাণ করা হচ্ছে বিপণি বিতান, বাড়িসহ নানা স্থাপনা। খালগুলো ভরাট করার কারণে শহরে বর্ষা মৌসুমে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা।

শরীয়তপুর পৌরসভা ও স্থানীয় সূত্র জানায়, কীর্তিনাশা নদীর পূর্ব তীরে শরীয়তপুর জেলা শহর অবস্থিত। এ নদী থেকে পাঁচটি খাল শহরে উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। রাজগঞ্জ ব্রিজ এলাকা থেকে পৌর বাসস্ট্যান্ড পযর্ন্ত এক কিলোমিটার খাল দখল হয়ে গেছে। খালের জায়গায় বালু ফেলে নির্মাণ করা হচ্ছে বাড়ি ও বিপণি বিতান। অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় অনেক ব্যক্তি জেলা পরিষদ থেকে বার্ষিক ভিত্তিতে খালের জমি লিজ নিয়ে ভরাট করেছেন। এ বিষয়ে জেলা পরিষদের প্রকৌশলী তৈয়বুর রহমান বলেন, ‘জেলা পরিষদের বিপণি বিতানের একটি অংশ খালের উপর পড়েছে। সে অংশের নিচ দিয়ে খালের প্রবাহ রাখা হয়েছে। সেখানে নৌযান চলাচল বন্ধ হলেও পানির প্রবাহ বন্ধ হবে না।’ জানা যায়, একটি খাল কীর্তিনাশা নদী থেকে ধানুকা গ্রাম হয়ে সার্কিট হাউসের সামনে দিয়ে রুদ্রকর এলাকার দিকে প্রবাহিত হয়েছে। এ খালটির ধানুকা ও সার্কিট হাউসের আশপাশ দিয়ে প্রায় ৫০০ মিটার দখল করা হয়েছে। আরেকটি খাল ধানুকা-স্বর্ণঘোষ হয়ে মনোহর বাজার খালের সঙ্গে মিশেছে। এ খালের প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা দখল হয়ে গেছে। এ খাল ভরাট করে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর, সড়ক ও জনপথ বিভাগ তাদের কার্যালয়ে প্রবেশের রাস্তা নির্মাণ করেছে। ফায়ার সার্ভিস কার্যালয়ের সামনের খাল দখল করে পাকা বিপণি বিতান নির্মাণ করেছেন জনৈক শফিউল্লাহ মাদবর। তিনি বলেন, ‘জায়গা ক্রয় করে মার্কেট নির্মাণ করেছি। আমার আশপাশের মানুষ জায়গা ভরাট করেছে। তাই আমিও ভরাট করেছি। খাল ভরাট করতে কারও অনুমতি নেইনি।’ শরীয়তপুর-ঢাকা সড়ক হতে খাল পাড় হয়ে চরপালং এলাকায় যাওয়ার জন্য সরকার একটি সেতু নির্মাণ করেছে। সেই সেতুর দুই প্রান্তের খাল বালু দিয়ে ভরাট করেছেন ওই গ্রামের আমীন বেপারী। তিনি জানান, খালের পাশের জমির মালিক আমি। খালের কিছু অংশ জেলা পরিষদ থেকে বরাদ্দ এনে ভরাট করেছি।

পৌর বাসস্ট্যান্ডের কাছে খাল ভরাট করে আধা পাকা বিপণি বিতান নির্মাণকারী কোটা পাড়ার রাজ্জাক তালুকদার বলেন, ‘অনেকে দখল করার কারণে বহু আগেই খালটি বন্ধ হয়ে গেছে। আমার জমির পাশে কিছু অংশ ভরাট করে মার্কেট নির্মাণ করছি।’ শরীয়তপুর পৌরসভার চরপালং এলাকার আবুল কাশেম জানান, খাল দখল করার কারণে বিলের পানি নামতে পারছে না। অনেক কৃষি জমি তলিয়ে থাকে। জেলা পরিষদ সূত্র জানায়, জেলা পরিষদের আয় বৃদ্ধি করার জন্য কিছু নয়নজুড়ি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। তারা যদি আইন ভেঙে তা ভরাট করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শরীয়তপুর পৌরমেয়র রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শহরবাসীকে জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষার জন্য খালগুলো দখলমুক্ত করা হবে। এ জন্য জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি, শিগগিরই উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হবে।’

সর্বশেষ খবর