রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

কোচিংয়ের প্রশ্নপত্রে স্কুলে ভর্তি পরীক্ষা

পাবনায় তোলপাড়

পাবনা প্রতিনিধি

পাবনার তিনটি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নের সঙ্গে একটি কোচিং সেন্টারের প্রশ্নের হুবহু মিল পাওয়ায় জেলাজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। অভিভাবকরা গতকাল জেলা প্রশাসকের বাসভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ ও শহরের আব্দুল হামিদ রোডে মানববন্ধন করে পরীক্ষা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিক্ষোভকারীদের শান্ত করে। বিক্ষোভকারীরা জানান, পাবনা শহরের জুবলী ট্যাংক এলাকার ‘ফেয়ার কোচিং সেন্টারে’ ১৫ দিন আগে শিক্ষার্থীদের একটি মডেল টেস্ট নেওয়া হয়। পাবনা জেলা স্কুল, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কৃষ্ণপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে গত বুধবার অনুষ্ঠিত হয় ভর্তিপরীক্ষা। এই পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সঙ্গে ওই কোচিং সেন্টারের প্রশ্নের হুবহু মিল রয়েছে। তারা ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও পুনরায় পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানান। অভিভাবকদের ভাষ্য, জেলা প্রশাসনের জনৈক কর্মকর্তার সঙ্গে জিলাস্কুলের জনৈক শিক্ষকের সখ্যতা রয়েছে। ওই শিক্ষকের স্ত্রীর ভাই সরকারি বুলবুল কলেজের সহকারী অধ্যাপক। তিনি ফেয়ার কোচিং সেন্টারের সঙ্গে জড়িত থাকায় ওই কোচিংয়ের প্রশ্নপত্র ভর্তিপরীক্ষায় সরবরাহ করা হয়েছে। তাছাড়া ফেয়ার কোচিং সেন্টারের পরিচালক মোতালেবের সঙ্গে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (শিক্ষা) কম্পিউটার ম্যান সুজনের সখ্যতার কারণেও এমনটা ঘটতে পারে।  ভর্তিকমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক রেখা রানী বলেন, ‘পরীক্ষার আগের দিন রাতে প্রশ্ন তৈরি করে আমার দায়িত্বে রাখা ছিলো। প্রশ্ন ফাঁসের সম্ভাবনা নাকচ করে তিনি জানান দু-একটি প্রশ্নের মিল থাকতে পারে। এরপরও বিষয়টি তদন্ত করে দেখব।’ ভর্তি পরীক্ষা কমিটির কেন্দ্র সচিব ও জিলাস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুশান্ত কুমার বলেন, প্রশ্ন তৈরির সঙ্গে তার বা অন্য বিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্টতা নেই।

জেলা প্রশাসনের নির্দেশে তারা পরীক্ষা গ্রহণ ও খাতা মূল্যায়ন করেন মাত্র। অভিভাবক বাবন সাহা জানান, এটা রীতিমতো শিশুদের সঙ্গে ফাজলামো। কোনোভাবেই বিষয়টি মেনে নেওয়া যায় না। অপর অভিভাবক মুরাদ পারভেজ জানান, আমার সন্তানকে এক বছর ভাল শিক্ষকের কাছে বহু টাকা খরচ করে বাড়িতে পড়িয়েছি। বিভিন্ন মডেল টেস্টে ছেলে সে তালিকায় অবস্থান করলেও ভর্তিপরীক্ষায় চান্স পায়নি। শিশুদের মেধা যাচাইয়ে এ ধরনের দুর্নীতির বিচার হওয়া উচিত। একই অভিযোগ করেন আরও অনেক অভিভাবক।

সর্বশেষ খবর