মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ঝিনাইদহে সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে লুটপাট, কাজ হচ্ছে নামমাত্র

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা-মুজিবনগর মহাসড়ক নির্মাণ প্রকল্পে লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় মেরামত করায় পাঁচ মাসের মাথায় ব্যস্ততম এই সড়কের আমেরচারা নামক স্থানে খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের এসডি নজরুল ইসলাম জানান, ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা-মুজিবনগর রাস্তা উন্নয়ন সরকারের চলমান প্রকল্প। বরাদ্দ পেলে আবার মেরামত করা হবে।

এদিকে একই সড়কের উত্তর নারায়ণপুর থেকে বৈডাঙ্গা মাঠ পর্যন্ত রাস্তাটি দেড় বছর ধরে খুঁড়ে রাখা হয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও নির্মাণের উদ্যোগ নেই। খুঁড়ে রাখার কারণে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে এ সড়কে চলছে যানবাহন।

ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের এপ্রিলে ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা-মুজিবনগর রাস্তা নির্মাণ শুরু হয়। ঝিনাইদহের অংশে বরাদ্দ হয় ৪৪ কোটি টাকা। কিন্তু কাজ শুরু থেকেই চলে নানা অনিয়ম। সংশ্লিষ্টরা মাটির কাজ না করে কয়েক কোটি টাকা ভাগাভাগি করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ আছে। এ বিষয়ে সড়ক বিভাগের উচ্চ পর্যায় থেকে তদন্ত হলেও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। দরপত্র সূত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা-মুজিবনগর রাস্তায় প্রতি কিলোমিটার নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় তিন কোটি টাকা। এরমধ্যে কিলোমিটারে ৫০ লাখ টাকার মাটির কাজ রয়েছে। বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত এই কাজে কতিপয় ঠিকাদার মানসম্মত কাজ করলেও বেশির ভাগ ঠিকাদার অফিসকে ম্যানেজ করে মাটির টাকা তুলে নিয়েছেন। এদিকে ‘কাজ শেষে’ ঠিকাদারদের বিল পরিশোধ করা হলেও রাস্তার দুই পাশ ও মাঝখানে সাদা রংয়ের ডিভাইডার দেওয়া হয়নি। হার্ড সোল্ডারে ফেলা হয়নি মাটি। ফলে অল্প দিনে রাস্তার বিভিন্ন অংশে ত্রুটির দেখা দিয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, ভুয়া পাইলিং, রং, রাস্তার পাশ পরিষ্কার, মাল সরবরাহ, বালি, ইট ও মাটির কাজ দেখিয়ে হরিলুট করা হয়েছে। এছাড়া প্রায় দুশ ভুয়া কোটেশন দেখিয়ে তছরুপ করা হয়েছে রক্ষণাবেক্ষণ খাতের কোটি কোটি টাকা। ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগের বিদায়ী নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম (বর্তমানে কুষ্টিয়ায়), এসডি নজরুল ইসলাম, এসও আহসান ও মনিরুল অর্থ লোপাটের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ আছে। বিদায়ী নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, মাটির কাজ এখনো শেষ হয়নি। রাস্তার কাজ চলমান। তাই টাকা তছরুপের বিষয়টি ঠিক নয়। তিনি ভুয়া কোটেশন ও বিল ভাউচারের বিষয়টি এড়িয়ে যান।

এসডি নজরুল ইসলাম জানান, প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে। নতুন করে বরাদ্দ পেলে নষ্ট হওয়া রাস্তা মেরামত করা হবে। এসও আহসানুল ও মনিরুল ইসলামের বক্তব্য জানতে ফোন করা হলে তারা রিসিভ করেননি। ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগের নতুন নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম আজাদ বলেন, ‘আমি নতুন যোগদান করেছি। কারা কি দুর্নীতি করেছে আমার জানা নেই। কোথাও রাস্তা নষ্ট হলে খোঁজ নিয়ে দেখব।’

সর্বশেষ খবর