বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

যমুনার ভাঙনে নিঃস্ব ৩০০ পরিবার

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

যমুনার ভাঙনে নিঃস্ব  ৩০০ পরিবার

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় আট কিলোমিটারজুড়ে ভাঙন —বাংলাদেশ প্রতিদিন

পঞ্চাশ বছর বয়সে প্রায় সত্তরবার বাড়ি ভাঙছি। ভাঙতে ভাঙতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। ফসলি জমিজমা বিলীন হয়ে যাওয়া রাস্তার ফকির হইয়্যা গেছি। এহোন সরকারের কাছে একটাই দাবি আমাদের যেন স্থায়ী একটা ব্যবস্থা কইর্যা দেন। কথাগুলো বলছিলেন নদী ভাঙনকবলিত সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ছোনগাছা ইউনিয়নের চর বাহুকা টুটুল মোড় এলাকার আছা আলী। তার মতো একই গ্রামের খয়ের ডাক্তার বললেন চোখের সামনে আমার সাতবিঘা ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। যা দিয়ে আমার সংসার চলত। এখন পরিবার পরিজন নিয়ে দুর্বিষহ অবস্থায় জীবনযাপন করছি। আরেক বাসিন্দা জহুরুল ইসলাম বললেন, দশ বিঘা ইরি-বোরো প্রজেক্ট নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সব হারিয়ে এখন রাস্তার ধারে খুপড়ি দোকান দিয়া সংসার চালাইতেছি। এমন অবস্থা ওই এলাকার শত শত পরিবারের। মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে নদীভাঙনের শিকার হয়ে প্রায় তিন শতাধিক পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। জানা যায়, যমুনা নদীতে পানি কম থাকলেও সদর উপজেলার ছোনগাছা ইউপির চর বাহুকা ও কাজিপুরের শুভগাছা ইউনিয়নের ঘাঁটি শুভগাছা এলাকার প্রায় আট কি.মি. এলাকাজুড়ে ভাঙন শুরু হয়েছে। একের পর এক ফসলি জমি ও বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। একেকটি পরিবার প্রায় ২০-৫০ বার ভাঙনের কবলে পড়েছে। অন্যত্র বসতভিটা সরিয়ে নেওয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও ছাত্র-ছাত্রী কমে যাচ্ছে। ভাঙতে ভাঙতে নদীটি এখন শহর রক্ষাবাঁধের সামান্য দূরে অবস্থান করছে। যে কোনো মুহূর্তে বাঁধটি ভেঙে গেলে ওই এলাকার হাজার হাজার বসতভিটা বিলীন হওয়ার পাশাপাশি সিরাজগঞ্জ শহরে অনায়াসে পানি ঢুকে পড়বে। ভাঙনকবলিত মানুষের অভিযোগ, ভাঙন শুরু হলে পাউবো শুধু দেখে যায়। চর বাহুকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ফজলুল হক জানান, বিদ্যালয়টি মাত্র নদী থেকে ২০ ফুট দূরে। যে কোনো এটি মুহূর্তে বিলীন হয়ে যাবে। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশালী আবুল কাশেম ফজুলল হক বলেন, ফান্ডের স্বল্পতার কারণে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। অনুমোদন পেলে কাজ শুরু করা হবে।

সর্বশেষ খবর