বুধবার, ৪ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

দুই ঘণ্টা ঘুরেও চিকিৎসা পাননি অন্তঃসত্ত্বা নারী

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বগুড়ার শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবার দুই ঘণ্টা ঘুরেও চিকিৎসা পেলেন না সুরাইয়া বেগম নামের এক অন্তঃসত্ত্বা নারী। চিকিৎসাসেবা না পেয়ে ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা এই নারী স্বামী মাসুদ রানা বাবু ঘটনাটি জানিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।  অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার বাগড়া গ্রামের বাসিন্দা মাসুদ রানা বাবু সোমবার বেলা ১২টার দিকে তার ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সুরাইয়া বেগমকে (২৫) নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান। নিয়মানুযায়ী বহির্বিভাগের টিকিট নেন। বহির্বিভাগের চিকিৎসক ডা. ফারজানা আকতার তার স্ত্রী সুরাইয়াকে গাইনি কনসালটেন্ট ডা. জয়োত্পলা শুক্লার কাছে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু চিকিৎসক শুক্লার কাছে গেলে প্রথমে তিনি সুরাইয়ার সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। একপর্যায়ে এই চিকিৎসক স্ত্রীকে নিয়ে নিচে চেকআপ রুমে যেতে বলেন স্বামী মাসুদ বাবুকে। পাশাপাশি বলে দেন, ‘তিনি অন্তঃসত্ত্বা রোগী দেখেন না’। পরে তার কথামতো তারা নিচে চলে আসেন। এভাবে দীর্ঘ দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করেন তারা। চিকিৎসক উপস্থিত থাকলেও চিকিৎসাসেবা মেলাতে পারেননি এই দম্পতি। শেষমেশ বাড়ি ফিরে যান। অভিযোগকারী মাসুদ আরও বলেন, এর আগেও আমার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়েছিল। কিন্তু বাচ্চা নষ্ট হয়ে গেছে। তাই এবার বেশি সতর্ক হয়েছি। কিন্তু তাতে লাভ কী। চিকিৎসক থাকার পরও তারা আমার স্ত্রীকে দেখেননি। এদিকে গেল ২৯ নভেম্বর মধ্যরাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রসূতিকক্ষ থেকে মাজেদা বেগমকে বের করে দেওয়া ও খোলা আকাশের নিচে সন্তান প্রসব এবং নবজাতক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি দেশের উচ্চতর আদালত পর্যন্ত গড়ায়। আদালত ঘটনার কারণ অনুসন্ধান ও দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে রুল জারি করেন। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী মাজেদা স্বামী ইলিয়াছ হোসেন বাদী হয়ে চিকিৎসক মোস্তফা আল্লামা তালুকদার পিয়াল ও নার্স সুষমা রানীকে আসামি করে শেরপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে অভিযুক্ত চিকিৎসক জেলহাজতে রয়েছেন। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আরেক অন্তঃসত্ত্বা নারীকে চিকিৎসাসেবা না দেওয়ার ঘটনায় স্বাস্থ্য বিভাগে তোলপাড় শুরু হয়েছে। বগুড়ার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোখলেছুর রহমান অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর