শনিবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

ট্রেন থামে লাল ব্যানারে

মাহবুবুর রহমান, শ্রীপুর (গাজীপুর)

ট্রেন থামে লাল ব্যানারে

গাজীপুরের শ্রীপুরে এভাবেই থামানো হয় ট্রেন —বাংলাদেশ প্রতিদিন

গাজীপুরের শ্রীপুর রেলস্টেশনে গত ১০ মাস ধরে লাল ব্যানার দেখিয়ে রেল লাইনে দাঁড়িয়ে যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাবিরতি করা হচ্ছে। সরকারিভাবে ট্রেনটি শ্রীপুরে যাত্রাবিরতির দাবি আদায়ের লক্ষ্যে শ্রীপুরবাসী ২০১৬ সালের ১৮ এপ্রিল থেকে এ কর্মসূচি পালন করছে। এ দাবির সমর্থনে শ্রীপুর রেলস্টেশনসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে টানানো হয়েছে শত শত ব্যানার। গত ১০ মাসে এমন কোনো পেশার লোক নেই যারা এ দাবির সঙ্গে যুক্ত হননি। দাবি আদায় করতে শ্রীপুরবাসী প্রতিদিন হয়রানিরও শিকার হচ্ছেন। শ্রীপুর বাজারের ব্যবসায়ী আবদুর রশীদ জানান, আন্দোলনের প্রথম দিকে গাড়ি থামিয়ে শ্রীপুরবাসী জয়দেবপুর, বিমানবন্দর এবং কমলাপুর যাতায়াত করতেন। শ্রীপুর থেকে টিকিটের ব্যবস্থা না থাকায় বিমানবন্দর ও ঢাকার যাত্রীরা জয়দেবপুর স্টেশন থেকে টিকিট সংগ্রহ করতেন। কিন্তু জয়দেবপুর রেলস্টেশনের কর্মীরা জরিমানা আদায় এবং হামলাসহ নানাভাবে যাত্রীদের হয়রানি শুরু করে। শ্রীপুর বাজারের ব্যবসায়ী মোশারফ হোসেন জানান, জয়দেবপুর রেলস্টেশনে অবতরণের পর স্টেশন কর্মীরা জরিমানার নামে যাত্রীদের কাছ থেকে ১০০-২০০ টাকা নেন। কিন্তু কোনো রসিদ দেন না। তিনি দাবি করেন অন্য ট্রেনের টিকিটে যমুনা এক্সপ্রেস ও ভাড়ার সিল দিয়ে টিকিট দেওয়া হলে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকার রাজস্ব আদায় হতো। শ্রীপুর বাজার ব্যবসায়ী পরিচালনা কমিটির সভাপতি রুহুল আমীন খান রতন বলেন, ট্রেনের যাত্রাবিরতির আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করতে পরিকল্পিতভাবে একটি মহল শ্রীপুরের যাত্রীদের হয়রানি শুরু করে। নিয়মিত যাতায়াতকারী আনোয়ার হোসেন বলেন, শ্রীপুরের সব যাত্রী টিকিট করতে আগ্রহী। অন্য যে কোনো ট্রেনের টিকিটে যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনের সিল দিয়ে বিক্রির ব্যবস্থা করা উচিত। এতে যাত্রী হয়রানি বন্ধ ও সরকারি রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে। জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার শহীদুল ইসলাম বলেন, টিকিটবিহীন কাউকে পাওয়া গেলে রেলওয়ের আইন অনুযায়ী জরিমানা আদায় করে থাকি। শ্রীপুর রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার শাহজাহান মিয়া জানান, প্রতিদিন নিয়মিত দুবার যমুনা এক্সপ্রেসের যাত্রাবিরতি দাবিতে আন্দোলন কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। শ্রীপুরের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার নেতৃস্থানীয় লোকজন এ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে থাকেন। দুর্ঘটনা এড়াতে বাধ্য হয়ে ট্রেন থামানোর সংকেত দিতে হয়। বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) হাবিবুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, স্থানীয় লোকজন ট্রেন থামানোর বিষয়টি অফিশিয়ালি আমরা জানি না। জোর করে ট্রেন থামানোর কোনো নিয়ম নেই। অফিশিয়ালি বিষয়টি জানতে পারলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর