রবিবার, ২২ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

কুলাউড়ায় হাম-রুবেলায় আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা

দুই মাসে অসুস্থ ২০ একজনের মত্যু

সৈয়দ বয়তুল আলী, মৌলভীবাজার

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় গত দুই মাসে ২০ জনের বেশি শিশু হাম-রুবেলায় আক্রান্ত হয়েছে। অসুস্থদের মধ্যে মভূকশীমইলের সাদিপুর জেলে পল্লীরই রয়েছে ১৬ শিশু। ইতোমধ্যে পল্লীর ৯ মাসের এক শিশুর এ রোগে মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তাছাড়া ওই এলাকার ১৭ শিশু সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) টিকা পাননি। উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সূত্রে জানা যায়, সাদিপুর এলাকায় হাম-রুবেলায় আক্রান্ত হয়েছে শূন্য থেকে পাঁচ বছর বয়সী ১৬ শিশু। এছাড়া সেখানকার ১৭ শিশুকে শনাক্ত করা হয়েছে যাদের ইপিআই’র কোনো ভ্যাকসিন দেওয়া হয়নি। এদের অধিকাংশের বয়স তিন থেকে পাঁচ বছর। সরজমিনে অনুসন্ধান করে জানা যায়, কুলাউড়ার দক্ষিণ সাদিপুরের কালা মিয়ার ৯ মাসের শিশুকন্যা রীমা হাম-রুবেলায় আক্রান্ত হয়ে গত ১৮ নভেম্বর মারা যায়। রিমার মা লিজা ও দাদি নাজমা জানান— ১৩ নভেম্বর জ্বর ও গায়ে ফেরা (হাম) হওয়ায় তাকে কুলাউড়া হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে মৌলভীবাজার পরে সিলেট ওসমানী মেডিকেলে পাঠানো হয়। ওসমানী মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে।

স্থানীয় খালিক ও সরফর মিয়া জানান, রিমা হামে অসুস্থ হওয়ার পর সপ্তাহ খানেকের মধ্যে আশপাশের কয়েক ঘরের আট শিশু এ রোগে আক্রান্ত হয়। মাস খানেক আগে জনৈক হেলাল মিয়ার আড়াই বছরের মেয়ে সাউদা ওসমানী মেডিকেলে চিকিৎসা নিয়েছে। এক সপ্তাহ আগে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ও ইপিআইর মাঠকর্মীরা সাদিপুর এসে হাম আক্রান্ত বেশক শিশুকে শনাক্ত করেন। এলাকায় এখন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, হাম-রুবেলায় আক্রান্ত শিশুর হাঁচি কাশির মাধ্যমে সুস্থরা আক্রান্ত হয়। রোগ প্রতিরোধে প্রদান করতে হয় ইপিআই টিকা। দ্রুত প্রতিকার না করা গেলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে। কুলাউড়া উপজেলা হেলথ ইনচার্জ আব্দুল আহাদ ও সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির আপ্তাব হোসেন বলেন, ‘এই এলাকায় আমাদের জরিপ চলছে। এ পর্যন্ত হাম আক্রান্ত ১৬ শিশু শনাক্ত করা হয়েছে। আর ইপিআই টিকা পাননি ১৭ জন।’ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুরুল হক বলেন, ‘আমরা এ রোগের প্রকোপ কমাতে কাজ করছি। হাম রোগ ও এর টিকা পায়নি এমন শিশু শনাক্ত করে তাদের টিকা প্রদানের আওতায় আনা হচ্ছে।’ মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন ডা. সত্যকাম চক্রবর্তী জানান, আমরা খোঁজ নিয়ে আক্রান্তদের চিকিৎসা দিয়েছি। এক শিশু মৃত্যুর বিষয়ে তিনি বলেন— ‘এখন পর্যন্ত আমি এ ব্যাপারে অবগত নই। খোঁজ নিয়ে দেখব।’

সর্বশেষ খবর