রবিবার, ২৯ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা
প্রধান শিক্ষকসহ দুজনকে মারপিট

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসী হামলা, ভাঙচুর : লুট

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

চলতি এসএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্র বিতরণ অনুষ্ঠানকে জামায়াত-বিএনপির মিটিং আখ্যা দিয়ে সন্ত্রাসীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও নগদ টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। এ সময় সন্ত্রাসীরা স্কুলের প্রধান শিক্ষক শাহাদত হোসেন ও সহকারী শিক্ষক আবদুর রউফকে মারপিট করেছে। পরে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে। গতকাল বিকালে সদর উপজেলার বহুলী ইউনিয়নের ডুমুরইছা গ্রামের ডা. তাসমিনা মতিন উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শিক্ষক-অভিভাবক ও ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। অবিলম্বে বখাটে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার দাবিতে সন্ধ্যার আগে ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুল মাঠে বিক্ষোভ মিছিলও করেছে। প্রধান শিক্ষক শাহাদত হোসেন খান জানান, গতকাল দুপুরে স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ফরিদুল ইসলাম বাচ্চু এসএসসি পরীক্ষার্থীদের মধ্যে প্রবেশপত্র বিতরণ শেষে বিকাল ৩টার দিকে চলে যান। পরে তিনি ও সহকারী শিক্ষক আবদুর রউফ মিয়া ও পিয়নসহ কয়েকজন স্কুলে কাজ করছিলেন। এ সময় এলাকার আওয়ামী লীগ নামধারী সন্ত্রাসী হেলাল উদ্দিন, সবুজ, শান্তাসহ ৬/৭জন সন্ত্রাসী স্কুলে ঢুকে সাবেক সভাপতি কেন স্কুলে এসেছিলেন? এখানে জামায়াত-বিএনপির মিটিং হচ্ছে এ কথা বলে অফিস কক্ষ ভাঙচুর শুরু করেন। এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা তাদের দুজনকে কলার ধরে মারপিট করে। এর পরই পুলিশ ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা হায়দার আলী তাদের উদ্ধার করেন। তিনি আরও জানান, মারপিটের সময়  স্কুলে কাজের জন্য রাখা ২৫ হাজার টাকা ও সহকারী শিক্ষকের ২০ হাজার টাকা এবং একটি মোবাইল সেট লুট করে নিয়ে গেছে সন্ত্রাসীরা। সহকারী শিক্ষক আবদুর রউফ মিয়া জানান, পুলিশকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আনা হয়েছিল। পুলিশ স্কুলে ঢোকার আগেই সন্ত্রাসীরা তাদের মারপিট করে। পরে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে। স্কুলছাত্র জয়নাল, সোহেল, শাহাদত হোসেন জানান, সন্ত্রাসীরা স্কুলে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও আমাদের শিক্ষককে মারপিট করেছে। আমরা স্যারকে মারপিটের ন্যায্য বিচার দাবি করছি। বিচার না হলে আমরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে রাখা হবে।

স্কুলছাত্র হাসেম, জনি, ইমন ও নাসিম জানান, জামায়াত-বিএনপির কোনো মিটিং স্কুলে হয়নি। আজকে আমাদের মাঝে এসএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্র বিতরণ করা হয়েছে। বিতরণ শেষ হওয়ার পরপরই সন্ত্রাসীরা স্যারের ওপর হামলা চালিয়েছে। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ কর্মী হেলাল বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, আমরা স্কুলে যাইনি। জামায়াত-বিএনপি মিটিং করছে শুনে পুলিশ গিয়েছিল।

সদর থানার উপ-পরিদর্শক আনিসুর রহমান জানান, জামায়াত-বিএনপির মিটিং হচ্ছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে ওই স্কুলে যাই। কিন্তু আমরা স্কুলে ঢোকার আগেই হেলালসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন প্রধান শিক্ষককে মারপিট ও অফিস কক্ষ ভাঙচুর করে। পরে তাকে উদ্ধার করে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়। তবে মিটিংয়ের বিষয়ে বলেন, আমরা গিয়ে কোনো মিটিং পাইনি। এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষককে থানায় অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর