রবিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

পুলিশের দুই সদস্যকে গণপিটুনি

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

বরিশালের চরমোনাই মাহফিলে আসা মুসল্লিবাহী রিজার্ভ বাসে চাঁদাবাজি এবং পরিবহন শ্রমিকদের টাকা ও মুঠোফোন সেট লুট করার সময় ট্রাফিক বিভাগের দুই সদস্যকে হাতেনাতে আটকের পর গণপিটুনি দিয়ে থানায় সোপর্দ করেছে স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা। এ সময় অপর দুই সদস্য পালিয়ে যায়। গতকাল ভোরে ফজরের নামাজের সময় নগরীর রূপাতলী আদর্শ সড়ক এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এদিকে চাঁদাবাজি এবং অর্থ লুটের সময় পুলিশের দুই সদস্যকে হাতেনাতে আটক করা হলেও তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে শুধু পুলিশ লাইনে ক্লোজ করে পুরো ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত দুজন হলেন— ট্রাফিকের এটিএসআই ওয়াসিম এবং কনস্টেবল চাঁন মিয়া। দুই সহযোগী পালিয়ে যাওয়ায় তাদের নাম জানা যায়নি।

গত শুক্রবার শুরু হওয়া চরমোনাই দরবার শরিফের তিন দিনব্যাপী মাহফিলে আগত মুসল্লিদের বহনকারী রিজার্ভ বাসগুলো নগরীর বিভিন্ন এলাকায় আগের মতোই বিভিন্ন সড়কের পাশে রাখা হয়। রূপাতলীর বাসিন্দা মো. মিজানুর রহমান জানান, ওয়্যারলেস সেট হাতে নিয়ে সাদা পোশাকে চারজন পুলিশ পরিচয়ে গতকাল ভোরে রূপাতলী আদর্শ সড়কের সন্মুখে রাখা বাসগুলো থেকে চাঁদা আদায় শুরু করেন। চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তারা বাস চালকদের চড় থাপ্পড় দেয় এবং ছয়জন চালককে জিম্মি করে তাদের কাছ থেকে প্রায় ২০ হাজার টাকা ও তাদের মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয়। এ সময় অন্য বাসের চালক ও হেলপাররা পুলিশ পরিচয়দানকারীদের ঘেরাও করেন। তাদের চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে যান পার্শ্ববর্তী মসজিদে ফজরের নামাজ শেষে বের হওয়া মুসল্লিরা। এ সময় দুজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও এটিএসআই ওয়াসিম ও কনস্টেবল চাঁন মিয়াকে লুট করা টাকা ও মুঠোফোনসহ আটক করে গণপিটুনি দেয় স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা ও পরিবহন শ্রমিকরা। খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে।

মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ট্রাফিক বিভাগের দুই সদস্যকে থানায় আনার পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাদের বক্তব্য অসামঞ্জস্যপূর্ণ। এ কারণে প্রাথমিকভাবে তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে পুলিশ লাইনসে ক্লোজ করা হয়েছে। রাতে এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার এসএম রুহুল আমীন এসব বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছেন বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, স্থানীয় বাসিন্দা এবং পরিবহন শ্রমিকদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশ কর্মকর্তাদের বলেছেন, ট্রাফিক পুলিশের ওই সদস্যরা রাস্তার পাশে পার্কিং করা বাবদ বাস থেকে চাঁদা তুলছিল। এ সময় তাদের হাতেনাতে আটক করা হয়। অপর দুজন পালিয়ে যায়।

সর্বশেষ খবর