শনিবার, ২৫ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপুত্র নদ দূষণের কবলে

রোমান চৌধুরী সুমন, নারায়ণগঞ্জ

পাপ মোচনের আশায় প্রতিবছর দেশ-বিদেশের লাখো পুণ্যার্থী হাজির হন নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দে অবস্থিত হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান ব্রহ্মপুত্র নদে। তবে কয়েক বছর ধরে সেই নদ পড়েছে দূষণের কবলে।

জানা গেছে, আগামী ৩ ও ৪ এপ্রিল হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপুত্র নদে স্নানোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। ১৩টি স্নানঘাটে দেশ-বিদেশের লাখো পুণ্যার্থীর সমাগম ঘটে। অভিযোগ রয়েছে, কয়েকটি কারখানার অপরিশোধিত তরল বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। এই পানিতে গোসল করে ইতিমধ্যেই চুলকানি, খোশ-পাঁচরাসহ নানা চর্মরোগে আক্রান্ত হয়েছে এখানকার বাসিন্দারা। নাব্যতা হারাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী ব্রহ্মপুত্র নদ। এর আগে একাধিকবার অভিযোগ করার পরও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি জেলা প্রশাসন কিংবা পরিবেশ অধিদফতর। জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২২ নভেম্বর বিকেএমইএর সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একটি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুটি কারখানার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সভায় উপস্থিত মদনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুস সালামও এমপির বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেন। এরপর ২০১৬ সালের ৮ জুলাই বন্দর উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের বারপাড়া গ্রামে একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে স্থানীয় এমপি ও বিকেএমইএর সভাপতি সেলিম ওসমান এলাকাবাসীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সরেজমিন নদের পাড় দেখেন এবং পানিতে দুর্গন্ধের সত্যতা পান। মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দ স্নানোৎসব উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক সরোজ কুমার সাহা জানান, আশপাশের কারখানাগুলোর ব্রহ্মপুত্র নদে অপরিশোধিত তরল বর্জ্য নির্গত করা এখনো বন্ধ হয়নি। আমরা এর আগেও একাধিকবার বিষয়টি স্থানীয় এমপি ও জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছিলাম। বন্দর উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন জানান, অপরিশোধিত তরল বর্জ্য ব্রহ্মপুত্র নদে ফেলা হচ্ছে।

পরিবেশ অধিদফতর নারায়ণগঞ্জ অফিসের উপ-পরিচালক মুজাহিদুল ইসলাম জানান, আমরা যতবারই অভিযুক্ত কারখানা তিনটিতে গিয়েছি ততবারই তাদের ইটিপি চালু পেয়েছি। তাদের কোনো বাইপাস সংযোগ পাইনি। তবে কারখানাগুলো রাতের আঁধারে অপরিশোধিত তরল বর্জ্য নিক্ষেপ করে কিনা তা আমাদের জানা নেই। এ ধরনের প্রমাণ পেলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বন্দর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মৌসুমী হাবিব জানান, এ বিষয়ে স্নানোৎসব উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ আমাকে মৌখিকভাবে বিষয়টি জানিয়েছেন। আমি গতকালই এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদফতরের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা শনিবারই বিষয়টি নিয়ে অভিযানে বের হবে। মহান স্বাধীনতা দিবসের পরে আমরা যৌথভাবে এ বিষয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করব।

সর্বশেষ খবর