সোমবার, ৩ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

আড়াই হাজার কোটি টাকার ফসল তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কা

ভাঙছে ‘ত্রুটিপূর্ণ’ ফসল রক্ষাবাঁধ

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

সুনামগঞ্জে বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় ‘ত্রুটিপূর্ণ’ ফসল রক্ষাবাঁধ ভেঙে তলিয়ে যাচ্ছে হাওরের বোরো। কৃষি বিভাগ ক্ষতির শঙ্কায় থাকা ফসলের পরিমাণ ২০ হাজার হেক্টর দাবি করলেও সেটা দ্বিগুণ হবে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। বৃষ্টি ও নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার সব হাওরই রয়েছ ঝুঁকির মধ্যে। এ পরিস্থিতিতে বোরো প্রধান সুনামগঞ্জের হাওরজুড়ে শুরু হয়েছে হাহাকার। ভাঙন ঠেকাতে স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করলেও দেখা মিলছে না পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কোনো কর্মকর্তা-ঠিকাদারের। বাঁধ ভাঙনের জন্য নির্মাণে ব্যাপক দুর্নীতিকে দায়ী করেছেন কৃষক। নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতি এবং বাঁধ ধসে ফসল তলিয়ে যাওয়ার প্রতিবাদে সুনামগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক গতকাল প্রায় দুই ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন বিক্ষুব্ধ জনতা। সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতর জানায়, সুনামগঞ্জে চলতি মৌসুমে দুই লাখ ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে বোরো। লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে আট লাখ ৭৮ হাজার মেট্রিক টন। যার বাজার মূল্য দুই হাজার ৬৩৪ কোটি টাকা। এই বোরো ফসলের দুই-তৃতীয়াংশ আগাম বন্যার হাত থেকে রক্ষার দায়িত্বে রয়েছে পাউবো। সংস্থাটি হাওরে ফসল রক্ষাবাঁধ নির্মাণ ও পুরোনো বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ৪৬ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেয়। এরমধ্যে ১০ কোটি ৭২ লাখ টাকা ব্যয়ে হাওরের মূল ফসল রক্ষাবাঁধ নির্মাণের কাজ করেন জনপ্রতিনিধিরা। বাকি টাকা নামমাত্র কাজ করে ব্যয় দেখানো হয়েছে। গতকাল এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ধর্মপাশা উপজেলার চন্দ্রসোনারথাল, ফাসুয়া, গুরমা, বোয়ালা, শালদিঘাসহ  কয়েকটি হাওরের বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে ৩৯০৬ হেক্টর জমির ফসল। স্থানীয়দের অভিযোগ, চৈত্র মাসেও বাঁধের কাজ সম্পন্ন না করায় পানির চাপে এটি ভেঙে যায়। জেলার অন্যতম প্রধান হাওর নলুয়ারহাওরের ডুমাখালি, শালিকা ও মাছুয়াখালি বেড়িবাঁধ ভেঙে ফসল তলিয়ে গেছে। ২৭টি হাওরের অনেক পয়েন্ট দিয়ে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। এছাড়া, দক্ষিণ সুনামগঞ্জের দেখার হাওরে বাঁধ ধসে তলিয়ে গেছে সাত হাজার হেক্টর জমির বোরো। তাহিরপুরে বাঁধ পরিদর্শনে আসা ইউএনও সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার উপজেলায় ৯০ ভাগ বাঁধে কাজই হয়নি।’ সুনামগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আফছর উদ্দিন বলেন, বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হবিগঞ্জে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত : প্রতিনিধি জানান, কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে আসা ঢলে হবিগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে নিম্নাঞ্চলের ইরি-বোরো ধানের খেত তলিয়ে যাচ্ছে। এতে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। নেত্রকোনায় কয়েকটি হাওর পানির নিচে : প্রতিনিধি জানান, মোহনগঞ্জে বেরিবাঁধ ভেঙে হাজার হাজার হেক্টর জমির বোরো পানিতে তলিয়ে গেছে। কৃষকদের অভিযোগ বাঁধ নির্মাণে ঠিকাদারের দুর্নীতির খেসারত দিতে হচ্ছে তাদের। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু তাহের বলেন, ৩১ মার্চ কাজ শেষ হয়েছে। কাজে কোনো গফিলতি ছিল না।

সর্বশেষ খবর