সোমবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

সিলেট-আখাউড়া রেলপথে ঝুঁকিপূর্ণ ট্রেন চলাচল

প্রায়ই চুরি যাচ্ছে ক্লিপ-হুক সংস্কারের অভাবে নষ্ট হচ্ছে সেতু-কালভার্টের স্লিপার

সৈয়দ বয়তুল আলী, মৌলভীবাজার

সিলেট-আখাউড়া রেলপথে ঝুঁকিপূর্ণ ট্রেন চলাচল

বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলীয় সিলেট-আখাউড়া রেল সেকশনে প্রায়ই চুরি যাচ্ছে ক্লিপ-হুক। সংস্কারের অভাবে সেতু-কালভার্টে কাঠের স্লিপার নষ্ট হয়ে যাওয়ায় মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে এ রেলপথ। কিছু স্থানে কাঠের স্লিপারের সঙ্গে পেরেক দিয়ে বাঁশের ফালি লাগিয়ে রাখা হয়েছে। ফলে ট্রেন চলাচলের সময় যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

রেলওয়ে প্রকৌশল বিভাগ সূত্র জানায়, ১৭৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সিলেট-কুলাউড়া-আখাউড়া সেকশনে রেললাইনে ছোট-বড় ২৫০টির বেশি সেতু রয়েছে। ৬০-৭০ বছর আগে নির্মিত এসব সেতু সংস্কার না করায় সেগুলোর অবস্থা বেহাল। প্রতিদিন এই রেলপথে ১২টি আন্তঃনগর ও ডেমু, লোকাল আটটি এবং কয়েকটি পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করে। সরেজমিনে কুলাউড়ার টিলাগাঁও, লংলা, ছকাপন, বরমচাল, ভাটেরা, শসসের নগর রেলস্টেশন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, রেললাইনের অধিকাংশ স্লিপারের ক্লিপ-হুক, নাট-বল্টু নেই। স্থানীয়দের দাবি অরক্ষিত থাকায় চোররা ক্লিপ-হুক, নাট-বল্টু ও ফিশপ্লেট নিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া লোকবল সংকটের কারণে এ রেলপথের কয়েকটি স্টেশন বন্ধ থাকায় মূল্যবান যন্ত্রাংশ চুরি হচ্ছে। মনু, ছকাপন, বরমচাল রেল সেতুসহ লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের মধ্যে পাহাড়ি সেতুগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। লাউয়াছড়া উদ্যানের পাশে জানকি ছড়ায় ১৫৭ নম্বর সেতুটি কয়েক দফায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে সিলেটের সঙ্গে দেশের রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল কয়েকবার। এসব সেতুর কাঠের স্লিপারগুলোও নষ্ট। নতুন স্লিপার বরাদ্দ না পাওয়ায় পেরেক মেরে বাঁশের ফালি দিয়ে নষ্ট স্লিপার লাইনে লাগিয়ে রাখা হয়েছে। এছাড়া সেতুর গার্ডারের অবস্থা জরাজীর্ণ।

রেলওয়ে শ্রীমঙ্গলের উর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী আলী আজম জানান, রেলওয়ের প্রকৌশলী বিভাগের তত্ত্বাবধানে ১৫টি সেতুর গার্ডার সংস্কারের কাজ চলছে। বরাদ্দের অভাবে বাকিগুলোর কাজ হচ্ছে না। ফলে যে কোনো সময় এ রুটে চলাচলকারী ট্রেন দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে। কুলাউড়ার ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী এরফানুর রহমানের ভাষ্য, নতুন কাঠের স্লিপার বরাদ্দ না পাওয়ায় পুরোনোগুলো পরিবর্তন করা যাচ্ছে না। ট্রেন চলাচলে যাতে ঝুঁকি না হয় এবং স্লিপার লাইন থেকে সরে না যায় তাই বাঁশের ফালি দিয়ে সেগুলো আটকিয়ে রাখা হয়েছে। কয়েকটি সেতুর গার্ডার সংস্কার কাজ চলছে। ক্লিপ-হুক চুরির ব্যাপারে তিনি বলেন, এখন আগের মতো চুরি হয় না। মাঝেমধ্যে ট্রেন চলাচলের সময় ক্লিপ-হুক স্লিপার ও রেললাইন থেকে ছুটে পড়ে যায়। চাহিদানুযায়ী ক্লিপ-হুক না থাকায় সবখানে লাগানো সম্ভব হয় না। বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী শহীদুল ইসলাম জানান, মৌলভীবাজার জেলায় এখন ১০টি রেল সেতু ঝুঁকিপূর্ণ। এরমধ্যে তিনটির সংস্কার শেষ হয়েছে। বাকিগুলোর কাজ শিগগিরই শেষ হবে।

সর্বশেষ খবর