শুক্রবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

তাড়াশে হামলা-মামলার ভয়ে গ্রামছাড়া ভূমিহীনরা

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে হামলা-মামলার ভয়ে চলনবিলের মাগুড়াবিনোদ গ্রামের ভূমিহীনরা গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছেন। আবারো হামলার আশঙ্কায় এলাকায় সার্বক্ষণিক পুলিশের টহল রয়েছে। নিরীহ এসব গ্রামবাসী আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

সরেজমিনে গেলে স্থানীয় ইউপি সদস্যা জয়নব খাতুন জানান, মাগুড়াবিনোদ গ্রামে খাস জমি-পুকুর রয়েছে। ভূমিহীনরা এগুলো চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহের পাশাপাশি মসজিদ উন্নয়ন কাজে ব্যয় করতেন। আমজাদ হোসেন মিলন এমপি হওয়ার পর তার ভাগ্নে আরিফ ও তার বাহিনী জমিগুলো নিজেদের দাবি করে দখলে নেয়। এ নিয়ে একাধিকবার বৈঠক হয়েছে। সবশেষ গত রবিবার বৈঠক চলাকালে আরিফের নেতৃত্বে একদল যুবক রামদা-লাঠি নিয়ে হামলা চালিয়ে ২০ জনকে আহত করে। পুলিশ ঘটনাস্থলে থেকে আটক করে আরিফকে। এরপর প্রতিদিন গ্রামবাসীকে ভয়ভীতি ও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। সোমবার আবারও হামলার চেষ্টা করলে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আনিছ প্রধানের নেতৃত্বে গ্রামবাসী এমপি পক্ষের দুটি দোকান ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় দুই পক্ষ মামলা করেছে। মামলা এবং ফের হামলার ভয়ে গ্রামের প্রায় সব পুরুষ এখন পলাতক।

ম.ম. আমজাদ হোসেন মিলন বলেন, ‘আমার আত্মীয়-স্বজনরা কাগজপত্রের ভিত্তিতেই জমিগুলো দখল নিয়েছে। তাছাড়া স্বজনরা কোথায় কি করল? তার দায় আমি কেন নেবো’। হামলায় আহত আব্দুল মালেকের মা মালা খাতুন বলেন, ‘আরিফ আমার ছেলেকে রামদা দিয়ে কোপাতে থাকে। আমি দৌড়ে এসে আরিফের দুই পা জড়িয়ে ধরে ছেড়ে দিতে বলি। কিন্তু তারপরও সে থামেনি। একটি হাতের অর্ধেকটা কেটে ফেলেছে।’ চা দোকানি দইমুদ্দিন জানান, মাতবররা আমার দোকানে বৈঠক করছিল। এ সময় আরিফরা ২০/২৫ জন এসে এলোপাতাঢ়ি কোপায়। রক্তে দোকান ভেসে যায়। তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। তাড়াশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সনজিত কুমার কর্মকার বলেন, ‘ভুমিহীনরা ৪০-৪২ বছর ধরে খাসজমিগুলো চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করছে। সম্প্রতি এমপির স্বজনরা কাগজ বানিয়ে এগুলো দখলে নেয়। গ্রামবাসী প্রতিবাদ করলে তাদের মারপিট করে। নিরীহ মানুষগুলোও আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত। দলের পক্ষ থেকে এমপি ও তার স্বজনদের হাত থেকে তাদের রক্ষার চেষ্টা চলছে।’

সর্বশেষ খবর