রবিবার, ২৩ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

বাঁধ ভেঙে পানির নিচে ৫০০ একর জমির বোরো

শেরপুর ও নালিতাবাড়ী প্রতিনিধি

বাঁধ ভেঙে পানির নিচে ৫০০ একর জমির বোরো

বাঁধ সংস্কার দাবিতে কৃষকরা শনিবার নালিতাবাড়ী-শেরপুর সড়ক দুই ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন —বাংলাদেশ প্রতিদিন

কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার চেল্লাখালী নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে গতকাল তলিয়ে গেছে ৫০০ একর জমির বোরো ধান। আরো এক হাজার একরের ফসল ডুবে যাওয়ার শঙ্কায় রয়েছে। বাঁধ সংস্কার দাবিতে কৃষকরা শনিবার নালিতাবাড়ী-শেরপুর সড়ক দুই ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন। বিএডিসি ও এলাকাবাসী জানান, পাহাড়ি ঢলে গত ২১ ডিসেম্বর নালিতাবাড়ীর উত্তর সন্নাসীভিটা এলাকায় চেল্লাখালী নদীর ফসল রক্ষাবাঁধের ৬৫ ফুট ভেঙে যায়। চার মাসেও তা সংস্কার না করায় গত বুধবার পাহাড়ি ঢল ভাঙা অংশ দিয়ে ঢুকে উত্তর সন্নাসীভিটা এলাকায় বোরো জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। শুক্রবার বিএডিসি ভাঙন অংশে বালুর বস্তা ফেললেও শনিবার সকালে পানির তোড়ে তা ভেসে যায়। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফ ইকবাল বলেন, বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ফসলের বেশি ক্ষতি হবে। দ্রুত পানি সরে গেলে ফলন ঠিকই হবে কিন্তু ফসলের গুণাগুণ কমে যাবে। ইউএনও তরফদার সোহেল রহমান বলেন, পানি নেমে গেলে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত বাঁধ সংস্কারের ব্যবস্থা করা  হবে। অপরদিকে টানা তিন দিনের বৃষ্টি ও ঢলে ঝিনাইগাতী উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী গ্রাম ও তলিয়ে যাওয়া বোরো এলাকাগুলো হচ্ছে, কান্দুলী, কোচনীপাড়া, বাগেরভিটা, দাড়িয়ারপাড়, কালিনগর, বালিয়া গাঁও, জরাকুড়া, পাইকুড়া, সুরিহাড়া, মাটিয়াপাড়া, পাগলারমুখ, বনগাঁও চতল প্রভৃতি গ্রাম। উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাদশা বলেন, চার হাজার হেক্টর ধানি জমি ও ৩০০ হেক্টর সবজি ক্ষেত এখন পানির নিচে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কোরবান আলী জানান, ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজ চলছে। এছাড়া নকলা উপজেলার উরফা ও গণপদ্দি এলাকার অধিকাংশ বোরো খেত এখন পানির নিচে।  ফুলপুরে ভেসে গেছে ইটখলা : ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলায় গত ক’দিনের টানা বর্ষণে ভেঙে গেছে ইটখলা মালিকদের স্বপ্ন। শনিবার উপজেলার আলোকদি ও ফতেপুর এলাকার সেবা ব্রিকস, সততা ব্রিকস, টাটা ব্রিকস, সামাদ ব্রিকস, সোনালী ব্রিকস ও যমুনা ব্রিকস সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা যায়, তৈরি করা লাখ লাখ ইট পুড়ানোর আগেই গত ক’দিনের টানা বর্ষণে নষ্ট হয়ে গেছে। সেবা ব্রিকসের ম্যানেজার আব্দুর রউফ জানান, তাদের ৪ লাখ ইট নষ্ট হয়েছে। যমুনা ব্রিকসের ম্যানেজার উসমান গণি জানান, তাদের নষ্ট হয়েছে প্রায় ৮লাখ ইট। উপজেলার প্রায় ৩৮টি ইটখলার সব ক’টিতেই এ অবস্থা। এসব ইটখলার কয়েক হাজার শ্রমিক এখন বেকার জীবন যাপন করছেন। যমুনা ব্রিকসের মালিক রামভদ্রপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম জানান, ভাই কি বলব— সব স্বপ্ন ভেঙে গেছে। এখন কি যে করব তা ঠিক করতে পারছি না।

সর্বশেষ খবর