সোমবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

অতিবৃষ্টি-ঢলে ডুবছে ফসল কপাল পুড়ছে কৃষকের

প্রতিদিন ডেস্ক

কয়েক দিনের টানা ভারী বর্ষণে প্লাবিত হয়েছে লক্ষ্মীপুর, শেরপুর, কুড়িগ্রাম জেলার এবং কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার নিম্নাঞ্চল। পানির নিচে চলে গেছে এ সব এলাকার হাজার হাজার হেক্টর জমির বোরো ধানসহ নানা ফসল। ইতিমধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে বহু চাষির কষ্টের ফসল। যা অবশিষ্ট আছে, বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে তার-ও শেষ রক্ষা হবে না বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট কৃষকরা। তাদের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর—

লক্ষ্মীপুর : জেলার নিম্নাঞ্চলের প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমির সয়াবিন, বাদাম, মরিচ, ডালসহ বিভিন্ন সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ২০ হাজার কৃষক। আগামী  ১০-১৫ দিনের মধ্যে যে ফসল ঘরে তুলতো কৃষকরা এখন তা পানির নিচে তলিয়ে থাকায় দিশাহারা হয়ে পড়েছে তারা। স্থানীয়রা জানান, লক্ষ্মীপুরে গত কয়েকদিন ধরে কখনো টিপটিপ কখনো ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। এতে মাঠের পর মাঠে বর্তমানে পানি জমে পচন ধরেছে ফসলের। বেশি ক্ষতি হয়েছে সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ, তোরাবগঞ্জ, পেয়ারাপুর, টুমচর, কমলনগরের মতিরহাট ও রামগতি এলাকার নিম্নাঞ্চলে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক গোলাম মোস্তফা জানান, ক্ষয়ক্ষতির প্রতিবেদন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পঠানো হয়েছে। কৃষকদের দেওয়া হচ্ছে নানা পরামর্শ।

শেরপুর : শেরপুরে ঝিনাইগাতিতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এ উপজেলার শহর অঞ্চল থেকে পানি সরে গেলেও নিম্নাঞ্চলে পানি বাড়ায় কৃষকের পাকা ধান তলিয়ে গেছে। এখন উপজেলার কৃষকের মধ্যে শুধুই হাহাকার। চাষিরা জানান, দ্রুত পানি না সরলে আর কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না। উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাদশা জানান, গত দুদিনের চেয়ে পানি আরও বেড়ে ঝিনাইগাতির ছয় হাজার হেক্টর ধানি জমি ও ৩০০ হেক্টর সবজি খেত এখন পানির নিচে। তবে নালিতাবাড়ি ও নকলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে বলে জানা গেছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ডিডি আশরাফ উদ্দিন জানান, যেহেতু পাহাড়ি ঢলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে; আশা করছি ঢল ২/১ দিনের মধ্যে সরে যাবে। পানি সরে গেলে কৃষকের তাড়াতাড়ি ধান কেটে ফেলাই উচিৎ হবে। কুড়িগ্রাম : টানা বৃষ্টিতে রৌমারী উপজেলার শতাধিক বিলের শত শত একর ইরি-বোরো খেত তলিয়ে গেছে। পাকা ও আধাপাকা ধান দীর্ঘ সময় পানির নিচে থাকায় তা পচে যাওয়ার শঙ্কায় দিশাহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক। জানা গেছে, ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকার রৌমারী উপজেলার লাঠিয়াল ডাঙ্গা কালাপানির বিল, বেকরী বিল, সীমান্ত ঘেঁষা আলগারচর দর্নির বিল, ডিসি সড়কের দুদিকের খাল বিলসহ শতাধিক বিল তলিয়ে গেছে। এ অবস্থায় দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না হলে ফসল পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাবে বলে দাবি কৃষকদের। চকরিয়া : কক্সবাজারের চকরিয়ায় বৈরী আবহাওয়ার পাশাপাশি টানা চারদিনের বর্ষণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে হারবাং বড়বিল ও কাকারার নলবিলের ১২০০ একর জমির পাকা বোরো ধান এখন পানির নিচে। কষ্টের ফসল হারানোর ভয়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। তাদের অভিযোগ, বাঘগুজারা রাবার ড্যাম মেরামত করতে মাটির বাঁধ দেওয়ায় সোনাইছড়ি ও হারবাং ছড়া খালের পানি ভাটির দিকে নামতে না পেলে এ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। চকরিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দিদারুল আলম জানান, বেশ কয়েকটি বাঁধ কেটে দেওয়ায় হয়েছে। বাঘগুজারা বাঁধ নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর