শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

গাংনীতে হাজার বিঘা জমির ফসল পানির নিচে

খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ

মেহেরপুর প্রতিনিধি

গাংনীতে হাজার বিঘা জমির ফসল পানির নিচে

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার চিত্লা গ্রামের নলুয়া খালে একাধিক বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করেছে স্থানীয় একটি মহল। বাঁধের ফলে পানি নিষ্কাশনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হওয়ায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। তলিয়ে গেছে আশপাশের এক হাজার বিঘা জমির ধান। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ৩০০ কৃষক স্বাক্ষরিত অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে।

অভিযুক্ত মাছ চাষির একজন মহিদুল। তিনি নিজের দোষ স্বীকার করে বলেন, ‘এভাবে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করে ভুল করেছি। বিষয়টা যে এত দূর গড়াবে তা ভাবেনি। দু-একদিনের মধ্যে বাঁধ কেটে দেব।’ স্থানীয় ধানখোলা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আ. রাজ্জাক জানান, খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করায় জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত বাঁধ অপসারণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গাংনীর ইউএনও (ভারপ্রাপ্ত) জামাল আহমেদ বলেন, বুধবার কৃষকদের অভিযোগপত্র পেয়েছি। এলাকা ঘুরে দেখে ব্যবস্থা নেব।’ সরেজমিন দেখা যায়, নলুয়া খালের কয়েক কিলোমিটার জুড়ে পর পর ছয়টি মাটির স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। বছরের পর বছর জোর করে এ বাঁধ দিয়ে চলছে মাছ চাষ। এতে প্রতি বছর কৃষকদের ক্ষতি হচ্ছে কোটি টাকার। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বাঁধের নেপথ্যে কলকাঠি নাড়ছেন ধানখোলা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক। স্থানীয়দের ভাষ্য, বাঁধের ফলে খালের আশেপাশের বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে গেছে। মাঠের পর মাঠ ধানে পচন ধরেছে। নলুয়া খাল পাড়ের চাষি মেহের আলী বলেন, ‘খালটি উন্মুক্ত মালিকানাধীন। খালের ওপর যাদের জমি মধ্যেও তাদেরই। এই জমির মালিকদের মধ্যে যারা প্রভাবশালী তাদের কিছু টাকা দিয়ে এবং গরিবদের হুমকি-ধামকি দিয়ে মহিদুল ইসলাম খালের জায়গা দখলে রেখেছেন। এ নিয়ে ২০১৫ সালে ইউনিয়ন পরিষদে শালিস বসে। শালিসে বাঁধ অপসারণ করার কথা থাকলে এখনো সরানো হয়নি। আমরা এর প্রতিকারের জন্য বহুবার মহিদুলের হাতে-পায়ে ধরেছি। হুমকি-ধামকি ছাড়া কিছুই মেলেনি।’

ধান চাষি মকছেদ আলী জানান, নলুয়া খালের বাঁধের কারণে জলবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে বহু আবাদি জমি অনাবাদি হয়ে পড়েছে। যেটুকু চাষ হয় তার ফসল এখন পানির নিচে। আমরা গরিব চাষিরা জমি আবাদ করিতে না পারায় পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন যাপন করিছি। নিজস্ব জমি থাকা সত্ত্বেও জলবদ্ধতা আমাদের গলার কাঁটা হয়ে বিঁধছে।’ একই অভিযোগ এলাকার বহু কৃষকের।

সর্বশেষ খবর