রবিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

ঝড়ে বিধ্বস্ত দুই হাজার ঘরবাড়ি একজনের মৃত্যু, আহত ৫০

প্রতিদিন ডেস্ক

লালমনিরহাটের কালবৈশাখী ঝড়ে দুই হাজারেরও বেশি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ঘরের টিন ও গাছের ডালের আঘাতে আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক লোক। হবিগঞ্জে লণ্ডভণ্ড হয়েছে শতাধিক বাড়ি। ঝড়ের কবলে নৌকাডুবিতে মারা গেছেন একজন। এছাড়া কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ঝড়-বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ধান, পাট ও ভুট্টা খেতের। শুক্রবার বিকাল ও রাতের ঝড়-বৃষ্টিতে এ ক্ষয়ক্ষতি হয়। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর—

লালমনিরহাট : জেলার তিনটি উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া শিলাবৃষ্টি ও কালবৈশাখীর ছোবলে দুই হাজারের বেশি ঘরবাড়ি ও শত শত হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বসতবাড়ি ভেঙে যাওয়ায় গৃহহীন হয়ে পড়েছে অসংখ্য পরিবার। ঝড়ের সময় ঘরের টিন ও গাছের ডাল পড়ে এর আঘাতে আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক লোক। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো খোলা আকাশের নিচে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন। শুক্রবার রাত ৮টা থেকে গতকাল বিকাল ৫টা পর্যন্ত পুরো জেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। সদর উপজেলার তিস্তা তীরবর্তী এলাকার মফিজুল, বাহার ও কুলসুম বলেন, ‘হঠাৎ ঝড়ে বাড়িঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সারারাত আমরা খোলা আকাশের নিচে ছিলাম। ব্যাংক-এনজিও থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে ভুট্টা ও ধান চাষ করেছি। সে ফসলও নষ্ট হয়ে গেছে কালবৈশাখীর ছোবলে। আগামী দিনগুলি কিভাবে কাটবে সে চিন্তায় দিশাহারা আমরা।’ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বিধু ভূষন রায় জানান, প্রাথমিকভাবে ক্ষতির পরিমাণ এক হাজার ২০০ হেক্টর হলেও আরো বাড়তে পারে।

হবিগঞ্জ : সদর, বানিয়াচং ও আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় ঘূর্ণিঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়েছে শতাধিক ঘরবাড়ি। ঝড়ের কবলে নৌকাডুবিতে নিখোঁজ হন দুজন। এরমধ্যে অনিক নামে একজনের লাশ উদ্ধার হলেও গতকাল বিকাল অন্যজনের সন্ধান মেলেনি। নিহত অনিক (৮) স্থানীয় স্কুলের প্রথম শ্রেণির ছাত্র ও বানিয়াচং উপজেলার তেরাতিয়া গ্রামের জগদানন্দ সরকারের ছেলে। শুক্রবার বিকালে ঝড়ের মধ্যে হাওর থেকে ধান কেটে আনার সময় নৌকাডুবিতে নিখোঁজ হয়েছিল অনিক ও রঞ্জন। এদিকে ঝড়ের সময় তারে গাছ পড়ে বিপর্যস্ত হয়েছে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। গতকাল দুপুরে সদরে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও আজমিরীগঞ্জ ও বানিয়াচঙ্গ ছিল বিদ্যুতবিহীন। ফুলবাড়ী : কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার উপর দিয়ে মধ্যরাতে বয়ে যাওয়া ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ইরি-বোরো খেতসহ, ঘরবাড়ি, গাছপালা ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার অধিকাংশ ধান খেতে ব্লাস্ট (ভাইরাসজনিত) রোগের প্রকোপে এমনিতেই কৃষকের মাথায় হাত। তার ওপর উঠতি ধানে শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছেন চাষিরা। উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, দু-এক দিনের মধ্যে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে।

সর্বশেষ খবর