শনিবার, ৬ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

সাজেকে আর্তমানবতার সেবায় সেনাবাহিনী

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

সাজেকে আর্তমানবতার সেবায় সেনাবাহিনী

রাঙামাটির প্রত্যন্ত ইউনিয়ন সাজেকে খাদ্যাভাব মোচনে কাজ করছে সেনা বাহিনী। সাজেক ইউনিয়নের ১০ গ্রামের কয়েক হাজার পরিবার কষ্টে দিনাতিপাত করছে। গ্রামগুলো হলো— করলা ছড়া টিলা, শিয়ালদহ পাড়া, গণ্ডাছড়া পাড়া, উদলছড়ি, নিউ থাং শং, জপুই, রুইলুই পাড়া, কংলাক পাড়া, একুজ্জাছড়ি ও উত্তর ভাইবোনছড়া। এ সব এলাকায় বাস করে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের কয়েক হাজার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পরিবার। গত বছর জুমে ভাল ফলন না হওয়ায় এ খাদ্য সংকট। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সাজেক ইউনিয়নের জনসংখ্যা প্রায় ৫২ হাজার। এ অঞ্চলে প্রকৃতিগত অপার সম্ভাবনা থাকলেও নেই যোগাযোগের সুব্যবস্থা। তাই গড়ে উঠেনি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও হাট-বাজার। পাহাড়ে জুম চাষ করে চলে এখানকার মানুষের জীবিকা। সাম্প্রতিক সময়ে পাহাড়ে বৈরী আবহাওয়া ও সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজির কারণে অনেকে জুম চাষ করতে পারেননি। তাই বছরের শেষ মুহূর্তে তাদের পড়তে হয়েছে খাদ্য সংকটে। সাজেক ইউপি চেয়ারম্যান নেলসন চাকমা জানান, পাহাড়ে জুমে ফলন কম হওয়া ও এলাকায় গাছ-বাঁশ কমে যাওয়ায় মানুষের আয়ও কমেছে। ফলে দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট। তিন মাস ধরে জঙ্গলের লতাপাতা, পাহাড়ি আলু, কুমড়া ও কলা খেয়ে কোনোভাবে বেঁচে আছে এ অঞ্চলের মানুষ। অনেকে খেতে না পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। খবর পেয়ে অসহায় মানুষগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়নের উদ্যোগে চারটি হেলিকপ্টারে করে দুর্গম অঞ্চলে পৌঁছানো হয় খাদ্যশস্য। দেওয়া হয় বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবাও। খাগড়াছড়ি রিজিয়নের বাঘাইহাট জোন কমান্ডার লে. কর্নেল মুহাম্মদ ইসমাইল খাঁ জানান— সাজেকের প্রত্যন্ত অঞ্চল যেখানে সড়ক যোগাযোগ নেই, সেখানে সেনাবাহিনী হেলিকপ্টারে করে অসহায়দের ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছে। যারা অসুস্থ হয়েছেন তাদের চিকিৎসা দিয়েছে। কারণ সেনাবাহিনী আর্তমানবতার সেবায় নিয়োজিত। ভবিষ্যতেও এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি সাজেকে খাদ্য সংকট সৃষ্টির পর সেনাবাহিনী ছাড়া এখনো অসহায় মানুষগুলোর সহযোগিতায় কেউ এগিয়ে আসেনি।

সর্বশেষ খবর