সোমবার, ২২ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

ফরিদপুরে সিরিজ হামলা ৩০ পরিবার বাড়িছাড়া

ফরিদপুর প্রতিনিধি

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের বেড়াদী গ্রামে একটি খুনের ঘটনা পুঁজি করে কয়েক দিন ধরে চালানো হচ্ছে হামলা ও লুটপাট। হামলাকারীরা বাড়িঘর ভাঙচুরের পাশাপাশি লুট করে নিয়ে যাচ্ছে মালামাল। এ ছাড়া আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে ঘরবাড়ি। কেটে নেওয়া হচ্ছে গাছ। গরু-ছাগল লুট করে নেওয়া হচ্ছে। এমনকি টিউবয়েলটিও উঠিয়ে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। ফসলি জমির ধান কেটে নেওয়া হয়েছে কয়েক শ বিঘা। খুনের ঘটনার পর হামলার ভয়ে বাড়ি-গ্রাম ছেড়ে ৩০টি পরিবারের চলে যাওয়ায় একশ্রেণির সুযোগসন্ধানী এমনটি করছে বলে স্থানীয় অনেকেই অভিযোগ করেছেন। সরেজমিন বেড়াদী গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, বেশ কয়েকটি আধাপাকা ঘর হাতুড়ি-শাবল দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বাড়ির সব মালামাল লুট করে নেওয়া হয়েছে। কয়েক দিন ধরে এমন বর্বরতা চললেও প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। জানা গেছে, ১২ এপ্রিল পূর্বশত্রুতার জের এবং ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন নিয়ে খুন হন এনজিও কর্মী মঞ্জুর হোসেন। এ ঘটনায় স্থানীয় টিআই জাকির হোসেনসহ বেশ কয়েকজনকে আসামি করে বোয়ালমারী থানায় একটি মামলা হয়। মামলায় পুলিশ ছয়জনকে আটক করে। খুনের ঘটনার পর থেকে হামলা-মামলার ভয়ে টি আই জাকিরের সমর্থক হিসেবে পরিচিত ৩০টি পরিবার গ্রাম ছেড়ে চলে যায়। এই সুযোগে দুই সপ্তাহ ধরে একের পর এক হামলা করে ২০টি বাড়ির অর্ধশতাধিক ঘর ভাঙচুর ও সব মালামাল লুট করা হয়। আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয় বেশ কয়েকটি ঘর। ৫টি বাড়ির বেশির ভাগ অংশই গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কেটে নেওয়া হয়েছে বিশাল আকারের কমপক্ষে ১০টি মেহগনিসহ বিভিন্ন ধরনের গাছ। উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে টিউবয়েল। গ্রাম ছেড়ে এসব পরিবার চলে যাওয়ায় তাদের সন্তানরা স্কুলে পর্যন্তও যেতে পারছে না। বাড়িঘরে হামলার শিকার পরিবারের সদস্য রত্না, মিতু, ববিতা, খুশি অভিযোগ করে বলেন, খুনের ঘটনা পুঁজি করে শাহেদ মাতুব্বর, সান্টু, রুভান, মন্টুসহ তার সহযোগীরা প্রতিদিনই কারও না কারও বাড়িতে হামলা করছে। যাদের বাড়িতে হামলা করে লুটপাট করা হয়েছে তারা হলেন টি আই জাকির হোসেন, টিকু, সেলিম, মিরাজ, কাজল, রাজ্জাক, সোহান, নাননু, মোহন, এসকেন, সাদ্দাম, জামাল, ফরিদ, আহমেদ, অরুণ, লিপু অন্যতম। একটি সূত্র জানায়, গ্রামের প্রভাবশালী এক ব্যক্তি খুনের ঘটনা পুঁজি করে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, ‘গ্রামে যাতে কেউ অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। খুনের ঘটনা নিয়ে কেউ যাতে ভিন্ন কিছু করতে না পারে সে ব্যাপারে পুলিশ সতর্ক রয়েছে।’

সর্বশেষ খবর