মঙ্গলবার, ৬ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে ৫০ গ্রাম পানির নিচে ফসলি জমি

বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে মনুর পানি

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের মনু নদীর পানি রবিবার রাত থেকে বিপদসীমার ১০৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। স্রোতের তোড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধের ছয়টি স্থানে ভেঙে গেছে। ভাঙা অংশ দিয়ে পানি ঢুকে তলিয়ে গেছে রাজনগর উপজেলার ৩০ ও কুলাউড়ার ২০ গ্রাম। নিমজ্জিত হয়েছে দুই হাজার একর ফসলি জমি। অন্যদিকে কমলগঞ্জ উপজেলার ধলাই নদীর ভাঙনে তলি গেছে আরো পাঁচ গ্রাম। জানা যায়, কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে মনু নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে রবিবার রাত থেকে বিপদসীমার ১০৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে রাজনগর উপজেলার মনু নদীর উজিরপুর, ভোলানগর, চাটি মেলাগড় ও কোনাগাওয়ে চারটি স্থানে ভাঙন দেখা দেয়। দ্রুত পানি ঢুকে করাইয়া, হাটিকরাইয়া, তেঘরি, দক্ষিণ করাইয়া, ইসলামপুর, খাসপ্রেমনগর, জালালপুর, নোয়াগাঁও, ভোলানগর, মিটিপুর, পঞ্চানন্দপুর, মশাজান, মৌলভীরচক, চান্দখাঁর হাবেলি, শান্তকুলসহ ৩০টি গ্রামে। এছাড়া কুলাউড়ার নিশ্চিন্তপুর ও টিলাগাওয়ের মিয়ার পাড়ার ভাঙনে মাদানগর, ভূঁইগাঁও, আলীপুর, দত্তগ্রাম, সোনাপুরসহ ২০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। গতকাল বিকাল পর্যন্ত দুই উপজেলার ৮০০ হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ তলিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে জেলা কৃষি বিভাগ। মনুর ১৮টি ও ধলাই নদীর আরো কয়েক স্থানে যে কোন সময় ভাঙনের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। রাজনগরের কামারচাক ইউপি চেয়ারম্যান নজমুল হক সেলিম জানান, তার এলাকার ভাঙনগুলো প্রায় ১০ ফুট দীর্ঘ। ভাঙনরোধে এলাকাসীকে নিয়ে দুই দিন ধরে চেষ্টা চালিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি। কুলাউড়ার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের ফজির মিয়া জানান, গত শনিবার রাতে বাঁধে ভাঙন দেখা যায়। এর আগ পর্যন্ত এলাকাবাসী অনেক কষ্টে বাঁধটি টিকিয়ে রেখেছিলেন। রাজনগরের উজিরপুর গ্রামে আলফু মিয়া জানান, অনেক মানুষ বাড়ি ছেড়ে স্থানীয় বাজারে আশ্রয় নিয়েছেন। গবাদী পশু নিয়ে তারা পড়েছেন বিপাকে। তিনি অভিযোগ করেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সময়মতো বাঁধ মেরামত করলে এই দুর্ভোগে পড়তে হতো না। পাউবোর সহকারী প্রকৌশলী মোকলেছুর রহমান বলেন, ‘আমাদের টিম বিভক্ত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় কাজ করছে। ইতোমধ্যে পানি নামতে শুরু করেছে। স্বাভাবিক হলে বাঁধ মেরামত কাজ শুরু করা হবে।’ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী বিজয় ইন্দ্র শংকর বলেন, ‘মনুর পানি এখন বিপদসীমার ৭০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর ধলাই নদীর পানি বিপদসীমার নিচে চলে আসছে। আশা করছি কালই (মঙ্গলবার) পানি কমে যাবে।’

সর্বশেষ খবর