বৃহস্পতিবার, ১৫ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

কুষ্টিয়া মেহেরপুরে ১১ দিন ধরে ইউরিয়া সরবরাহ বন্ধ

ভরা আউশ মৌসুমে সার সংকটের শঙ্কায় চাষিরা

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) আওতাধীন কুষ্টিয়া বাফার গুদামে ১১ দিন ধরে ইউরিয়া সার সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। অভিযোগ আছে, প্রভাবশালী এক ব্যক্তির ভয়ে শ্রমিক সরবরাহের ঠিকাদার কাজে যোগ না দেওয়ায় এ অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে কুষ্টিয়া ও মেহরেপুর জেলার ডিলাররা ১০ দিন গুদাম থেকে কোনো ইউরিয়া উত্তোলন করতে পারেননি। ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কায় রয়েছেন দুই জেলার কৃষক। স্থানীয় কৃষকদের দ্রুত ইউরিয়া সরবরাহের লক্ষ্যে কুষ্টিয়ায় বিসিআইসি গত ৭ মার্চ গুদাম খোলে। বিসিআইসি নিযুক্ত কুষ্টিয়ার ৮২ ও মেহেরপুরের ৩৫ জন ডিলার এখান থেকে ইউরিয়া সংগ্রহ করে দুই জেলার কৃষকের কাছে বিক্রি করে আসছেন। জনৈক জিল্লুর রহমান ওই গুদাম থেকে সার লোড-আনলোডের জন্য শ্রমিক লাগিয়ে ট্রাকপ্রতি ১ হাজার ৫০০ টাকা আদায় করছিলেন। এ নিয়ে জেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভায় হৈ চৈ হলে ডিসি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। পরে শ্রমিক সরবরাহের জন্য ঠিকাদার নিয়োগে দরপত্র আহ্বান করে বিসিআইসি। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে কাজ পান ঝিনাইদহের মেসার্স রাসেল এন্টারপ্রাইজ। ৪ জুন প্রতিষ্ঠানটি কার্যাদেশ পেলেও কুষ্টিয়ার এক প্রভাবশালীর বাধার মুখে কাজ শুরু করতে পারেনি। মেসার্স রাসেল এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী রাসেল আহমেদ বলেন, ‘কাজ পাওয়ার পর থেকে ওই ব্যক্তি তাকে হুমকি দিচ্ছেন। বলছেন, ঝিনাইদহের লোক হয়ে আপনি কুষ্টিয়ায় কাজ করবেন এটা আমাদের জন্য লজ্জার। আমি এটা মেনে নেব না। আপনি ঠিকাদারী করতে চাইলে ঝিনাইদহের গুদামে গিয়ে করুন।’ রাসেল জানান, ওই নেতার কথা উপেক্ষা করে তিনি ৫ জুন শ্রমিক নিয়ে গুদামে গেলে একদল সন্ত্রাসী তাদের হুমকি-ধমকি দিয়ে তাড়িয়ে দেন। বিসিআইসি কর্তপক্ষকে জানিয়েও লাভ হয়নি।

স্থানীয় ডিলাররা জানান, এখন আউশের ভরা মৌসুম। এ কারণে চাষীদের ইউরিয়ার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কিন্তু বিসিআইসির অনুকূলে টাকা জমা দিয়ে পে অর্ডার করেও আট দিন ধরে সার নিতে পারছেন না। কুমারখালী উপজেলার ডিলার রাসেদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ডিলাররা গুদাম থেকে সার উত্তোলনের জন্য প্রায় চার কোটি টাকার পে-অর্ডার করেছি, কিন্তু বেশ কদিন হলো সার পাচ্ছি না।’ রাসেদুল বলেন, ‘ডিলারদের কাছে আগের কিছু ইউরিয়া ছিল, তা দিয়ে হয়তো ২/১ দিন চলবে। সমস্যা সমাধান না হলে দুই জেলায় সারের মারাত্মক সংকট দেখা দেবে।’ একই অভিযোগ করেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ডিলার মিজানুর রহমান। গুদাম ইনচার্জ নূরুল আলম জানান, ‘এখানে একটা ঝামেলা হয়েছে। তাত্ক্ষণিক বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’ কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক জহির রায়হান বলেন, ‘বিষয়টি আমি এই প্রথম শুনলাম। খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব’।

সর্বশেষ খবর