শুক্রবার, ২১ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

কৃষি ঋণ বিতরণের নামে লাখ লাখ টাকা লোপাট

সোনালী ব্যাংক ময়েনদিয়া শাখা

ফরিদপুর প্রতিনিধি

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা সোনালী ব্যাংকের ময়েনদিয়া শাখায় ভুয়া কৃষি ঋণ প্রদানের নামে লাখ লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ব্যাংকের সাবেক ম্যানেজার মনোজ কুমার সাহা (বর্তমানে ফরিদপুর প্রিন্সিপাল অফিসে কর্মরত), নির্মল কুমার ও দীপক কুমার সরকার এ টাকা আত্মসাতে জড়িত বলে জানা গেছে। কৃষি ঋণ নিয়ে জালিয়াতির বিষয়টি তদন্তে গঠন করা হয় কমিটি। কমিটির রিপোর্টে ঋণের টাকা আত্মসাতের প্রমাণও মিলেছে। এরপরও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ায় ব্যাংকের অন্য কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

প্রাপ্ত অভিযোগ ও ব্যাংকের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মনোজ কুমার সাহা, নির্মল কুমার ও দীপক কুমার ময়েনদিয়া শাখা ম্যানেজার থাকাকালে ৪৫০টি ভুয়া কৃষি ঋণ বিতরণের নামে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। যাদের নামে ঋণ বিতরণ দেখানো হয়েছে তাদের বেশির ভাগই জানেন না তারা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন। এদের মধ্যে সুজন, মোছলেম, জাহাঙ্গীর, আমিনুর, মন্টু অন্যতম। পরে তারা ঋণের বিষয়টি জানতে পেরেছেন। এদিকে ওই ৪৫০টিসহ মোট সাড়ে ছয়শ কৃষি ঋণ আদায়ে উকিল নোটিস পাঠানোর নাম করে ঋণের হিসাবের বিপরীতে দরিদ্র কৃষকদের একাউন্ট থেকে ৬০০ থেকে ১২০০ টাকা করে কেটে নেওয়া হয়েছে। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংক সার্কুলার অনুযায়ী কোনো কৃষি ঋণ গ্রহীতাকে উকিল নোটিস পাঠানো যাবে না।

ঋণ বিতরণে অনিয়ম এবং ভুয়া ঋণের নামে টাকা আত্মসাতের কারণ তদন্তে ২০১৪ সালে কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সে সময় কমিটি ভুয়া ঋণের মাধ্যমে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে রিপোর্ট দিয়েছিল। টাকা আত্মসাতকারী মনোজ কুমার সাহা বর্তমানে ফরিদপুর প্রিন্সিপাল শাখায় এসপিও হিসাবে কর্মরত। মনোজকে বাঁচাতে ফরিদপুর প্রিন্সিপাল অফিসের ডিজিএম লক্ষ্মী নারায়ণ ঘোষাল উঠেপড়ে লেগেছেন বলে অভিযোগ আছে। এ ব্যাপারে জানতে মনোজ কুমারের মোবাইলে ফোন করলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে লাইন কেটে দেন। পরে কয়েকবার ফোন দেওয়া হলেও রিসিভ করেননি। ফরিদপুর প্রিন্সিপাল অফিসের ডিজিএম মতিউর রহমান জানান, ঋণের বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কমিটি হয়েছে। কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে তাদের ‘পেনশন’ আটকে দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর