মঙ্গলবার, ১ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

একের পর এক হামলা লুট গ্রামছাড়া ১০ পরিবার

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

প্রতিপক্ষের একের পর এক হামলা, ভাঙচুর, লুটপাটের ঘটনায় দিশাহারা রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার চক মহব্বতপুরের দশটি পরিবার। এক সপ্তাহ ধরে চলছে এ তাণ্ডব। সর্বশেষ রবিবার দিবাগত রাতে চারটি পান বরজ ধ্বংস করে দিয়েছে। ধারাবাহিক হামলা-মামলার মুখে এখন বাড়িছাড়া ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। সরকার দলীয় স্থানীয় এক নেতার মদদে এ হামলা-লুট হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন নির্যাতিতরা। অত্যাচার ও নিপীড়নের মুখে গতকাল গ্রামবাসী রাজশাহী শহরে এসে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছেন। হামলার ঘটনায় থানায় মামলা হলেও পুলিশ প্রভাবশালীদের পক্ষ নিয়েছে বলেও দাবি তাদের। নিরাপত্তার নামে পুলিশ ওই গ্রামে অবস্থান নিলেও তাদের সামনেই অভিযুক্তরা ভাঙচুর-লুটপাট চালাচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রবিবার রাতে চক মহব্বতপুরের কবিরাজ পাড়ার আজাবুল, সাহাবুল, জার্জিস আলম, মুস্তাকিন ও ইউসুফের তিন বিঘার পানের বরজ কেটে ধ্বংস করে দিয়েছে প্রতিপক্ষ। এতে প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এর আগে আরও পাঁচটি পানের বরজ, দুই হাজার বাচ্চাসহ একটি মুরগি খামার ধ্বংস, ১০টি বাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালানো হয়। একজনের শিক্ষা সনদ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ অবস্থায় তারা সবকিছু ছেড়ে বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।  আয়েন উদ্দিন নামে এক ভুক্তভোগী জানান, বাড়ির সীমানাপ্রচীর তৈরি নিয়ে প্রতিবেশী হাবিবুরের সঙ্গে তার বিরোধ বাধে। ২৩ জুলাই নির্মাণকাজ চলাকালে সৈনিক লীগ নেতা এনামুল হকের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা তাদের উপর হামলা চালায়। এ সময় কয়েকজনকে কুপিয়ে জখম, বাড়িঘর ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসযোগ করে। পরদিন নিরাপত্তার জন্য তাদের বাড়িতে পুলিশ মোতায়েন করা হলেও থেমে থাকেনি তাণ্ডব। পুলিশের সামনে তার স্বজনদের বাড়িতে একের পর এক হামলা চালানো হয়। অনেক দেন দরবার করে ঘটনার দুইদিন পর পুলিশ তাদের মামলা রেকর্ড করে। প্রধান আসামি করা হয়েছে এনামুল হককে। ক্ষতিগ্রস্ত আজিজুল হক বলেন, গত ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন উপজেলা বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ সভাপতি এনামুল হক। তারা ছিলেন বিদ্রোহী প্রার্থী ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি হারুন অর রশিদের পক্ষে। নির্বাচনে দুজনই পরাজিত হন। সেই ক্ষোভে এনামুল তার বাহিনী দিয়ে এ তাণ্ডব চালাচ্ছেন। এনামুল হক বলেন, ‘ওই দিন বিষয়টি মীমাংসার জন্য সেখানে গিয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের উপর হামলা চালিয়ে মারপিট করে। আমি নিজও আহত হই। এরপর থেকে চিকিৎসাধীন রয়েছি। পরে কে বা কারা এ হামলা চালিয়েছে আমার জানা নেই।’ বাগমারা থানার ওসি জানান বলেন, উভয়পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় দুটি মামলা হয়েছে। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ১০টি পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার জন্য আয়েন উদ্দিনের বাড়িতে পুলিশ দেওয়া হয়েছে। তবে রাতের আঁধারে প্রতিপক্ষ নানাভাবে হামলা চালাচ্ছে। তাদের ধরতে পুলিশের তত্পরতা অব্যাহত রয়েছে।

সর্বশেষ খবর