শুক্রবার, ১৮ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

এমপির টাকা নিয়ে নেতা হাওয়া দুই দিনেও খিচুড়ির দেখা নেই

দেবীগঞ্জে আশ্রয় কেন্দ্রের বন্যার্তরা হতাশ

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

পঞ্চগড়ের আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে বন্যার্তদের সরকারিভাবে তিন বেলা খাবার দেওয়ার কথা। কিন্তু আশ্রিতরা খিচুড়ি পাচ্ছেন একবেলা। অনেক কেন্দ্রে একবেলাও দেওয়া হয় না বলে অভিযোগ। কোনো এলাকায় ‘অপর্যাপ্ত’ বলে জেলা প্রশাসনের পাঠানো ত্রাণসামগ্রী ফেরত দেওয়া হয়েছে। দেবীগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি আশ্রয় কেন্দ্র ঘুরে গতকাল এ তথ্য পাওয়া গেছে। দেবীগঞ্জের সুন্দরদিঘী ইউনিয়নের ফুলবাড়ি উচ্চবিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় ৩০০ বন্যার্ত মানুষ। এই ইউনিয়নে আরও ছয়টি আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছেন সহস্রাধিক লোক। এদের অনেকের ঘরবাড়ি বানের তোড়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম সুজন (পঞ্চগড়-২) বুধবার এ সব আশ্রয় কেন্দ্র দেখতে যান। এ সময় তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা শাহীনুর রহমানের হাতে বন্যার্তদের ওই রাতেই খিচুড়ি খাওয়ানোর জন্য পাঁচ হাজার টাকা দেন। শাহিন ওই টাকা নিয়ে সেই যে গেলেন গতরাত পর্যন্ত আর ফিরেননি। এতে বন্যার্তরা খুবই হতাশ। কারণ দুই দিনেও নেতার দেখা নেই, খিচুড়িরও দেখা নেই। ফুলবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘সবার সামনে এমপি সাহেব টাকা দিলেন রাতের খাবারের ব্যবস্থা করতে। কিন্তু এখন শাহিনের পাত্তা নাই।’ ব্যাপার কী জানার জন্য শাহীনের মুঠোফোন কল করলে তিনি রিসিভ করেননি। দেবীগঞ্জের চেংটি হাজরা ডাঙ্গা ইউনিয়নের ফুলতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রিতরা বলেন, ‘এক বেলা খিচুড়ি পেয়েছি। কিন্তু খাওয়া যায় না। হলুদ দিয়ে দায়সারা পাকানো। তাই গরুকে খাইয়েছি।’ কয়েকদিনের বর্ষণ ও উজানের পানিতে এ উপজেলার ১০ ইউনিয়নের কয়েকশ গ্রাম ডুবে গেছে। বন্যার্তদের জন্য ১০০টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় অনেকে কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরছেন। যাদের বাড়িঘর পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন তারা আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়তে আরও সময় লাগবে। এদিকে ত্রাণের পরিমাণ কম হওয়ায় সদর উপজেলার অমরখানা ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান তা গ্রহণ করেননি। তিনি বলেন, ‘আমার ইউনিয়নে প্রায় দুই হাজার লোক বন্যাকবলিত। জেলা প্রশাসন মাত্র ৫০০ কেজি চাল বরাদ্দ দিয়েছে। আমি গ্রহণ করিনি। এত অল্প চাল নিয়ে কাকে দেবো।’ দেবীগঞ্জের ইউএনও ফিরুজুল ইসলাম বলেন, জেলা প্রশাসন প্রদত্ত ৭০ মেট্রিকটন চাল বিতরণ করা হয়েছে। বেসরকারিভাবেও চাল দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনে বরাদ্দকৃত দুই লাখ টাকাও বিতরণ করা হয়েছে। ইউএনও জানান, বরাদ্দ নিয়ে কোন অভিযোগ পাননি।

সর্বশেষ খবর