সোমবার, ২৮ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

বন্যার প্রভাব লালমনিরহাটের গরুর হাটে, হতাশ কৃষক

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লালমনিরহাটের কৃষি বিভাগ থেকে শুরু করে সর্বত্র। তিস্তা-ধরলায় ঘরবাড়ি হারানো হাজারো মানুষ এখনও রয়েছেন বাঁধে। এ অবস্থায় বন্যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে ঈদুল আজহার গরুর হাটে। শেষ সম্বল গরু বাজারে এনে উপযুক্ত দাম না পাওয়ায় কৃষকদের চোখে-মুখে হতাশার ছাপ।

বন্যায় সব হারানো কৃষকরা ভেবেছিলেন গৃহপালিত গবাদি পশু ঈদ বাজারে বিক্রি করে লাভবান হবেন। বাজারে গরু এনে দাম না পাওয়ায় ঈদসহ পরবর্তী দিনগুলো কিভাবে কাটবে তা নিয়ে দুশ্চিতায় রয়েছেন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা। যে গরুর দাম ৩০ হাজার টাকা হওয়ার কথা তা বিক্রি করতে হচ্ছে ১৮-২০ হাজারে। কয়েক কৃষক কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, বন্যা তো সব নিয়ে গেছে। এখন একমাত্র সম্বল গরু কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি। এতে আগামীর পথচলাও রুদ্ধ হয়ে গেল। শহরের বিডিআর হাটে গতকাল গরু বিক্রি করতে আসা আয়নাল হক বলেন, ‘বন্যায় তো আমার সব শেষ। একটি গরু ছিল, আশা করেছিলাম দাম ৮০-৮৫ হাজার টাকা হবে। সেই গরু বিক্রি করতে হলো ৫৫ হাজারে। এই টাকা দিয়ে ঈদ তো দূরের কথা আগামী দিনগুলো পরিবার নিয়ে কিভাবে কাটাবো ভেবে পাচ্ছি না।’ মোগলহাট থেকে আসা আজিবর রহমান বলেন, ‘ধরলায় ঘরবাড়ি বিলীন হয়েছে। চারটি গরুর দুটি স্রোতে ভেসে গেছে। ভাবছিলাম বাকি দুটি বিক্রি করে রাত কাটানোর ঠাঁই তৈরি করবো। গরুর দাম নেই, সে আশাও শেষ।’ লালমনিরহাটের সবচেয়ে বড় দুরাকুটি গরু হাটের ইজারাদার নুর ইসলাম জানান, হাটের আইনশৃঙ্খলা ঠিক আছে। তবে বন্যার প্রভাব পড়েছে। কৃষকরা গরুর দাম না পেলেও লাভবান হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পশুর হাট জমজমাট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি জানান, ঈদুল আজহা সামনে রেখে জেলার বিভিন্ন পশুর হাট জমে উঠেছে। গরু-ছাগল আসতে শুরু করেছে বাজারে। স্থানীয় খামারী ও পাইকাররা জানান, এবার দেশীয় খামারের পশু দিয়েই কোরবানির চাহিদা মেটানো সম্ভব। তবে বন্যার প্রভাবে দাম পড়ে যাওয়ায় ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। খামারিদের দাবি, এখন যে দামে গরু বিক্রি হচ্ছে তাতে পুঁজিই উঠবে না। এর ওপর যদি ভারত থেকে গরু আসে তবে তারা বেশি ক্ষতির মুখে পড়বেন।

জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবু সাইদ জানান, যে পরিমাণ গরু আছে তা দিয়েই চাহিদা মিটবে। ভারত থেকে গরু এলে খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। সদর মডেল থানার ওসি জানান, ক্রেতা-বিক্রেতা যাতে হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে দৃষ্টি রয়েছে।

সর্বশেষ খবর