শুক্রবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

দখল-দূষণে রুগ্ন ডাকাতিয়া নদী

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

দখল-দূষণে রুগ্ন ডাকাতিয়া নদী

বাগমারা বাজার এলাকায় ডাকাতিয়া নদী দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধ স্থাপনা —বাংলাদেশ প্রতিদিন

দখল আর দূষণে রুগ্ন হয়ে যাচ্ছে দক্ষিণ কুমিল্লার প্রাণস্পন্দন হিসেবে পরিচিত নতুন ডাকাতিয়া নদী। এ নদীতে এক সময় পালতোলা নৌকা চলত। ছিল লঞ্চ ও ট্রলারের রুট। শুষ্ক মৌসুমেও কৃষক পর্যাপ্ত পানি পেত। দীর্ঘদিন খনন না হওয়ায় নদীর তলদেশ পলিতে ভরাট হয়ে অল্প বৃষ্টিতেই ভাসিয়ে দেয় দুই কূল। সেচের সময় নদী হয়ে উঠে ধূ-ধূ বালুচর। পানি উন্নয়ন বোর্ডের দখল উচ্ছেদ এবং নদী খননের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গেছে।

নদী এলাকা ঘুরে জানা গেছে, কুমিল্লার সদর দক্ষিণ, লালমাই, লাকসাম ও মনোহরগঞ্জ উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত নতুন ডাকাতিয়া নদী। এ নদীর কারণে দক্ষিণ কুমিল্লার কৃষিতে এক সময় সমৃদ্ধি আসে। এ নদীতে শুকনো মৌসুমে এখন পানি থাকে না বললেই চলে। বাগমারা বাজার, দৌলতগঞ্জ বাজার এবং মনোহরগঞ্জ বাজারসহ কয়েকটি স্থানে ডাকাতিয়া নদীতে চলছে দখলের প্রতিযোগিতা। ১৩০ ফুট চওড়া নদী কোথাও ৬০ ফুটে পরিণত হয়েছে। দৌলতগঞ্জ বাজারের রাজঘাট, গোলবাজার, সামনীর পুল, পশ্চিমগাঁও, সিংজোড়, হামিরাবাগ, কালিয়াপুর এবং মনোহরগঞ্জ বাজার, আমতলী, চিতোশীসহ বিভিন্ন স্থানে ডাকাতিয়ার দুই তীরে দখলদাররা অবৈধভাবে বিল্ডিং, মার্কেট ও স্থাপনা নির্মাণ করেছে। এতে নদীর অস্তিত্ব হুমকির মুখে। স্থানীয়রা নদীটি দখলমুক্ত করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। লাকসামের প্রবীণ সাংবাদিক আবদুল জলিল বলেন, ডাকাতিয়া নদীকে কেন্দ্র করে লাকসামের দৌলতগঞ্জ বাজার বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়। প্রভাবশালীরা নদী দখল করে নিচ্ছে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। মনোহরগঞ্জের আবদুর রহমান নামের এক ব্যক্তি জানান, বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতাসীনরা নদী দখল আর দূষণে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ডাকাতিয়া নদী এক সময় দক্ষিণ কুমিল্লার আশীর্বাদ ছিল, এখন তা অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। লাকসাম উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রফিকুল হক লাকসামের দৌলতগঞ্জ বাজার এলাকায় নদী দখল হয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, নদী দখলকারীদের তালিকা করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড এগিয়ে এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া পৌরসভার বর্জ্য নদীতে না ফেলার জন্য পৌর কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড কুমিল্লার (পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ) নির্বাহী প্রকৌশলী এবিএম খান মোজাহেদী বলেন, নতুন ডাকাতিয়া নদীর লাকসাম ও মনোহরগঞ্জ অংশে দখলের কিছু অভিযোগ পেয়েছি। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নদী খননের বিষয়েও পরিকল্পনা চলছে বলে তিনি জানান।

সর্বশেষ খবর