সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

কুষ্টিয়ার মোকামে আবারও বেড়েছে চালের দাম

প্রশাসনের নির্দেশনা কাজে আসছে না

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

কোনোভাবেই লাগাম টানা যাচ্ছে না দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চালের মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগরের ব্যবসায়ীদের। ঈদের কয়েকদিন আগে চালের বাজার অস্থিরতার কারণে স্থানীয় প্রশাসন ব্যবসায়ীদের ডেকে দাম কমানোর আলটিমেটাম দিলেও তাতে সাড়া দেননি ব্যবসায়ীরা। উল্টো শুক্রবার থেকে কুষ্টিয়ায় মিনিকেট চালের দাম আবারো কেজিপ্রতি দুই টাকা বেড়েছে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে অন্য সব ধরনের চালের দাম। সরেজমিন দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চালের মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মোকামে যে মিনিকেট চাল গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৫৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল সেই চাল শুক্রবার থেকে দুই টাকা বেড়ে ৫৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আটাশ, কাজল, লতাসহ অন্যান্য চালও কেজিপ্রতি এক থেকে দেড় টাকা বেড়েছে। শনিবার কুষ্টিয়া পৌরবাজারে গিয়ে দেখা যায় মিনিকেট চাল কেউ ৫৭ টাকা আবার কেউ ৫৮ টাকায় বিক্রি করছেন। দামের এ হেরফেরের কারণ জানতে চাইলে নিশান নামে এক খুচরা চাল ব্যবসায়ী জানান, যাদের কাছে আগের কেনা চাল আছে তারা ৫৭ টাকায় বিক্রি করতে পারছেন। আর যারা শুক্রবার এবং শনিবার মোকাম থেকে চাল কিনেছেন তারা ৫৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। চালের দাম আবারও বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ জানতে চাইলে কুষ্টিয়া চালকল মালিক সমিতির সভাপতি জয়নাল আবেদীন জানান, মিল মালিকদের কিছুই করার নেই। কৃষকের ঘরে ধান নেই। ধান কেনার ক্ষেত্রে মিলাররা দাম দেখছেন না। মিল চালু রাখার জন্য যে যা দাম বলছে মিলাররা সেই দাম দিয়ে ধান কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। এ নেতা বলেন, ‘শুধু দেশে নয়, বাইরেও চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। আমদানি করা চালের দামও কেজিতে দুই টাকা বেড়েছে। যার প্রভাব পড়েছে দেশের চালের বাজারে।’

বন্যার অজুহাত দেখিয়ে হঠাৎ করে আগস্ট মাসের শেষদিকে প্রথম দফায় সব ধরণের চালের দাম কেজিপ্রতি তিন টাকা বাড়িয়ে দেন মিল মালিকরা। ওই সময় মিলাররা ঈদের পর দাম আরও বাড়বে বলে ইঙ্গিত দেন। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে চালের বাজারে নৈরাজ্য সৃষ্টির অভিযোগ এনে ৩০ আগস্ট সভা ডেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চালের দাম কমিয়ে সহনীয় রাখার জন্য মিল মালিকদের নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক জহির রায়হান। কিন্তু মিলালরা জেলা প্রশাসনের এ নির্দেশনার তোয়াক্কা না করেই দ্বিতীয় দফায় চালের দাম বাড়াল। পৌর বাজারের চাল ব্যবসায়ী রঞ্জুর হোসেন নিশান অভিযোগ করেন প্রশাসনের নজরদারির অভাবে মিল মালিকরা যখন খুশি তখন ইচ্ছে মতো চালের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) হাবিবুর রহমান বলেন, চালের বাজার স্বাভাবিক রাখতে মিল মালিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। দাম বাড়ার প্রমাণ পেলে মিল মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর