তিন দিনের প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে ২৫ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে এ সব এলাকার রোপা আমন। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে বহু মানুষ। উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে আসা ঢলের তোড়ে মহারশি নদীর রামেরকুড়া এলাকার বেড়িবাঁধের পুরোনো ভাঙা অংশ দিয়ে সদর বাজারে পানি প্রবেশ করে। এতে বাজারের তিন শতাধিক দোকান তলিয়ে যায়। গত সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এ সব দোকান বন্ধ ছিল। এ ছাড়া উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স, ডাকঘর, সাবরেজিস্ট্রার, নলকুড়া ভূমি কার্যালয়, যুব উন্নয়ন, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প, প্রাণি সম্পদ ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের চারপাশের এলাকা প্লাবিত হয়। সেইসঙ্গে উপজেলার কালিনগর, সারিকালিনগর, দড়িকালিনগর, দীঘিরপাড়, চতল, লঙ্কেশ্বর, পাইকুড়া, জরাকুড়া, কোনাগাঁও, নয়াপাড়া, দাড়িয়ারপাড়, কান্দুলী, জিগাতলা, বনগাঁও, হাঁসলিবাতিয়া, রাঙ্গামাটিয়া, হাতিবান্ধা, বেলতৈল ও পুরুষোত্তমখিলাসহ ২৫টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ফয়জুন্নাহার বলেন, ‘চলতি মৌসুমে ঝিনাইগাতীতে ১৪ হাজার ৬৭৫ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে। ঢলে প্রায় সব ধান খেত এখন পানির নীচে।’ বনগাঁও গ্রামের সৈয়দুর রহমান জানান, তার আধা একর জমির আমন ধান পানিতে নিমজ্জিত। ধান নষ্ট হয়ে গেলে কীভাবে সংসার চলবে এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। ইউএনও ফারহানা করিম জানান, বর্তমানে তার কার্যালয়সহ সদর বাজার এলাকার দোকানপাট ২-৩ ফুট পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে গেছে। আর বৃষ্টি না হলে ঢলের পানি দ্রুত সরে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম।
বিপদসীমার উপরে তিস্তার পানি : লালমনিরহাট প্রতিনিধি জানান, উজানের ঢলে তিস্তা নদীতে বন্যা দেখা দিয়েছে। হাতিবান্ধা উপজেলার দোয়ানি পয়েন্টে তিস্তার পানি গতকাল ভোরে বিপদসীমার পাঁচ সেন্টিমিটার ও দুপুরের পর থেকে সাত সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারাজের সব (৪৪টি) জলকপাট খুলে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। চলতি বছর তিস্তা নদীর পানি এ নিয়ে তৃতীয় দফা বিপদসীমা অতিক্রম করলো। এদিকে তিস্তার ঢলে ১৮ গ্রামের ১০ হাজার পরিবার বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে বলে জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তফিজুর রহমান জানান, ভারি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে বন্যা দেখা দিয়েছে। সানিয়াজান ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর বলেন, ফরেস্টের চরের ১৫টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। হাতিবান্ধার ইউএনও এনামুল কবীর জানান, ঢলে তিস্তা বিপদসীমা অতিক্রম করলেও পানি কমে আসছে।