বুধবার, ৪ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

মামলা কইরা কিছু করতে পারমু না ওপরওয়ালাই বিচার করব

বিশ্বদেবের মৃত্যু তদন্তে কমিটি

শেরপুর ও নালিতাবাড়ী প্রতিনিধি

‘এটাই আমার বিশ্বদেব। এই নৌকা আমারে মা বইলা ডাকবো। আমি গরিব মানুষ। মামলা কইরা কিছু করতে পারমু না। সৃষ্টিকর্তার কাছেই বিচার দিলাম। উপরওয়ালা এর বিচার করব।’ পারটেক্স দিয়ে ছেলের হাতে তৈরি একটি নৌকা বুকে আগলে এভাবে বিলাপ করছেন নালিতাবাড়ীতে পুলিশের আটকের পর নিহত বিশ্বদেবের মা। মায়ের পাশাপাশি শোকে পাথর ভাই নিত্যানন্দ ও বোন শিউলি। বিশ্বদেবের এমন বিদায়ে শোকাহত প্রতিবেশিরাও। গতকাল বিশ্বদেবের বাসায় গিয়ে দেখা যায় এ শোকাবহ দৃশ্য।  বিশ্বদেবের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে শেরপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আমিনুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এদিকে সোমবার সন্ধ্যায় কড়া পুলিশ প্রহরায় সদর হাসপাতাল মর্গ থেকে বিশ্বদেবের লাশ আনা হয় নালিতাবাড়ীর মহাশ্মশানে। সেখানে লাশ দাহ করে চির বিদায় জানানো হয়। জানা যায়, নালিতাবাড়ী শহরের কাচারি পাড়ার মৃত বিধান চন্দ্রর ছোট ছেলে বিশ্বদেব। দুই ভাই, দুই বোন নিয়ে ছিল তাদের অভাবের সংসার। কাঠমিস্ত্রি বিশ্বদেব দুই মাস আগে মাকে বোনের বাড়িতে রেখে ঢাকায় যায় বেশি রোজগারের আশায়। সেখানে একটি সিগারেট কোম্পানিতে চাকরি নেয়। দুর্গাপূজার ছুটিতে মায়ের কাছে এসেছিল। বড়বোন শিউলী জানান, গত রবিবার বিকালে বিশ্ব বাসা থেকে বের হয়। সন্ধ্যায় তারা জানতে পারে বিশ্বকে এএসআই সুমন ও আতিয়ার গাঁজা রাখার অভিযোগে থানায় নিয়ে গেছে। পরে ভগ্নিপতির মুচলেকা নিয়ে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়। বাসায় এসে সে বমি ও পাতলা পায়খানা করতে থাকে। অবস্থার অবনতি হলে রাত ১টায় হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরিবারের দাবি, পুলিশি নির্যাতনের কারণেই বিশ্বর মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে, গতকাল জেলা পুলিশ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এ সময় পুলিশ সুপার সাংবাদিকদের থানাহাজতে বিশ্বদেব থাকাকালীন সিসিটিভিতে ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজ দেখান। তার মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ জড়িত নয় বলে দাবি করেন তিনি। সুরাতহাল রিপোর্টেও তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন নেই বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পওয়া যায়নি।

সর্বশেষ খবর