রবিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

ধর্ষণের শাস্তি জুতার ১০ ঘা

নাটোর প্রতিনিধি

লালপুরের গোপালপুর পৌরসভার বিজয়পুর মধ্যপাড়া এলাকায় এক প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের শাস্তি হিসেবে ধর্ষকের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে মাত্র ১০ ঘা জুতা পেটা এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা। বিচারে এ রায় দিয়েছেন স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর আসাদুল ইসলাম। তবে অভিযোগ পাওয়া গেছে, বাঁচিয়ে দেওয়ার জন্য এই কাউন্সিলর ধর্ষকের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন। এরপর শুক্রবার বিকালে ধর্ষণের শিকার ওই প্রবাসীর স্ত্রীর বাড়িতে অনুষ্ঠিত গ্রাম্য শালিস বসিয়ে ধর্ষককে উপরোক্ত শাস্তি দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে স্থানীয় গ্রাম্য মাতব্বর মো. ফজলুর রহামান জানান, পূর্ব পরিচয় থাকা পার্শ্ববর্তী কদিমচিলান পালোহারা গ্রামের বজলু প্রামাণিকের ছেলে তুষার ইসলাম (২০) রাত ১০টার দিকে প্রবাসীর স্ত্রীর বাড়িতে এসে বিদেশ থেকে স্বামীর পাঠানো কিছু টাকা দিয়ে চলে যান। কিন্তু এর কিছুক্ষণ পর  তুষার ফিরে এসে বলে, আরও কিছু টাকা আছে, ভুলে দেয়া হয়নি। এ  কথা শুনে ওই গৃহবধূ দরজা খুললে ঘরের ভিতর প্রবেশ করে ‘মেরে ফেলা’র হুমকি তুষার তাকে ধর্ষণ করে। এসময় গৃহবধূর চিত্কারে আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে ধর্ষককে আটক করেন এবং তাকে গণধোলাই দেন।  ধর্ষণের শিকার গৃহবধূর পরিবারের লোকজন জানান, বিচারে তারা সন্তুষ্ট নন। অপরদিকে থানা পুলিশকে জানালে গ্রাম্য মাতব্বরা তাদের মেয়েকে তালাক দেবে বলে ভয় দেখাচ্ছে।  এমন পরিস্থিতিতে তারা নিরূপায় হয়ে এই বিচার মেনে নিয়েছেন। 

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক ধর্ষক তুষারের এক ঘনিষ্ট আত্মীয় জানান, পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আসাদুল ইসলাম ‘এটা ধর্ষণ নয় পরকীয়া সম্পর্ক- এমন বিষয় তুলে ধরে বিচারে সামান্য শাস্তি প্রদান করবেন’ শর্তে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন। এদিকে ধর্ষণের শিকার গৃহবধূ জানান, তার প্রতি গ্রাম্য প্রধানেরা অবিচার করেছেন।

এ ব্যাপারে কাউন্সিলর আসাদুল ইসলাম গোপনে টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, সকল  গ্রাম প্রধানদের উপস্থিতিতে এই বিচার করা হয়েছে। লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ওবায়েত জানান, এ ঘটনা পুলিশ জানে না। তবে অভিযোগ পেলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

সর্বশেষ খবর