বৃহস্পতিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

চালু হয়নি এক দশকেও নষ্ট হচ্ছে অবকাঠামো

বর্ষিজোড়া ইকোপার্ক

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

জনবল সংকটের কারণে দীর্ঘ এক দশকেও চালু করা সম্ভব হয়নি মৌলভীবাজারের বর্ষিজোড়া ইকোপার্ক। প্রায় ৯০০ একর আয়তনের এই ইকোপার্কটির দায়িত্বে আছেন মাত্র দুজন কর্মকর্তা-কর্মচারী। এতে পার্কটি অনেকটা অরক্ষিত হয়ে পড়ছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় এখানে ঘুরতে আসা পর্যটকরা প্রায়ই পড়ছেন বখাটে ও ছিনতাইকারীর কবলে। সরেজমিনে দেখা গেছে, ইকোপার্কে ঢোকার প্রধান ফটকটি বন্ধ। টিকিট কাউন্টারের জন্য নির্মিত ভবনের পাশের ছোট পথে পার্কের ভেতরের রাস্তা দিয়ে পথচারী ও ছোট বাইক আসা-যাওয়া করছে। বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগীয় কার্যালয় সূত্র জানায়, মৌলভীবাজার শহর থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দক্ষিণে বর্ষিজোড়া ইকোপার্কের অবস্থান। বন্যপ্রাণী ও উদ্ভিদবৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং পর্যটক আকর্ষণ করতে ২০০৬ সালের জুলাইয়ে সংরক্ষিত বনভূমিকে ইকোপার্ক ঘোষণা করা হয়। ৮৮৭ একর জায়গা নিয়ে গড়ে উঠা এই পার্কে ২০০৬-২০০৭ অর্থবছরে দুটি দুই কক্ষবিশিষ্ট ইকো কটেজ, চারটি পিকনিক স্পট, দুটি পর্যবেক্ষণ (নিরাপত্তা) টাওয়ার, চারটি নিরাপত্তা পোস্ট, পাঁচটি গণশৌচাগার, একটি টিকিট কাউন্টার ও একটি তোরণ নির্মাণ করা হয়। এতে ব্যয় হয়েছে প্রায় সোয়া কোটি টাকা। কিন্তু জনবল সংকটের কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা যায়নি পার্কটি। দীর্ঘদিন অরক্ষিত পড়ে থাকায় নষ্ট হচ্ছে অবকাঠামো। কটেজ দুটির দরজা জানালা ও কাঠের ছাদ ভেঙে গেছে। গণশৌচাগারেরও একই অবস্থা। পর্যটকরা ইচ্ছামতো পার্কে যাতায়াত করছেন। নিরিবিলি স্থান ও শহরের পাশে হওয়ায় অনেকে এখানে ঘুরতে এলেও প্রায়ই বখাটে ও ছিনতাইকারীর কবলে পড়তে হয় তাদের। রাতে বসে মদ-গাঁজার আসর। বর্তমানে ইকোপার্কটির দায়িত্বে আছেন একজন বিট কর্মকর্তা ও একজন মালি। এই বিট কর্মকর্তা আবার হাকালুকি বিটেরও দায়িত্বে। তাঁকে দুই জায়গাতেই ছোটাছুটি করতে হচ্ছে। বন্যপ্রাণী গবেষক ও বন্যপ্রাণীর আলোকচিত্রী তানিয়া খান বলেন, ‘এই পার্কটি প্রাণীবৈচিত্র্য সমৃদ্ধ একটি বন। এখানে অনেক রকম স্তন্যপায়ী প্রাণী আছে। খাদ্যের অভাবে এরা অনেক সময় লোকালয়ে চলে আসে। কখনো মানুষের হাতে মারাও পড়ে। ইকোপার্কে বন্যপ্রাণীর খাদ্যের জোগান বাড়ানো গেলে এরা হয়তো আর বাইরে আসবে না’। ইকোপার্কের বিট কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা মোনায়েম হোসেন বলেন, ‘পার্কটির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তার জন্য ন্যূনতম আটজন লোক দরকার। আছি মাত্র দুজন। তাছাড়া আমাকে হাকালুকি বিটও দেখতে হচ্ছে। জনবল সংকটের কারণে এখনো পার্ক আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা যায়নি। তবে এখানে অপ্রীতিকর ঘটনা আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে’।

সর্বশেষ খবর