বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

কাটা হচ্ছে পাহাড়-নদীর মাটি হুমকির মুখে জীববৈচিত্র্য

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

কুমিল্লার গোমতী নদী ও জেলা সীমান্তবর্তী পাহাড়-টিলার মাটি কেটে বিক্রি করে একটি চক্র। এতে হুমকির মুখে পড়েছে জীববৈচিত্র্য। প্রশাসনিক অভিযানের পরও অপরিকল্পিতভাবেই রাতদিন চলছে মাটিকাটা। সরেজমিনে দেখা যায়, কুমিল্লা সদর, বুড়িচং, মুরাদনগর উপজেলা দিয়ে প্রবাহিত গোমতী নদীর চরাঞ্চলের মাটি অবাধে কেটে ট্রাক দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ইটভাটা ও বসতবাড়ির ভরাটের কাজে। শতাধিক মাটিবহনকারী ট্রাক্টর চলাচলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নদীর বাঁধ। এছাড়া মাটি কেটে গন্তব্যে পৌঁছানোর সময় ধুলাবালিতে শিশু ও বয়স্করা শ্বাসকষ্টসহ নানা সমস্যায় ভুগছেন। সদর উপজেলার পালপাড়া, বানাশুয়া, রত্নবতী ও বুড়িচংয়ের বালিখাড়া, কামারখাড়া, শ্রীপুর, গোবিন্দপুরের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রতি বছর মাটি কাটার ফলে ধুলাবালি উড়ে তাদের বাসাবাড়িসহ গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি করছে। গোমতী নদী-সংলগ্ন এলাকায় বসবাস করা কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া এলাকার সংযোগ সড়কগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এদিকে সীমান্তবর্তী বুড়িচং উপজেলার বাকশীমুল ইউনিয়নের পাহাড়পুর, আনন্দপুর, জঙ্গলবাড়িসহ কয়েকটি এলাকায় টিলা কেটে মাটি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এতে বড় ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটার ফলে হুমকির মুখে পড়েছে জীববৈচিত্র্য। এছাড়া আনন্দপুর এলাকার কয়েকজন অভিযোগ করেন, হুমকি দিয়ে তাদের মালিকানাধীন আবাদী জমি, টিলা ও বনাঞ্চল কেটে ফেলা হচ্ছে। দিচ্ছে নামমাত্র মূল্য। সীমান্তবর্তী আনন্দপুর এলাকার রহমান জানান, বছর দশেক আগেও আমাদের এলাকার টিলা ও বনগুলোতে শিয়াল, বনমোরগ, বাঘডাস, বিভিন্ন প্রজাতির সাপ ও নানা জাতের পাখিসহ জলাশয়গুলোতে অতিথি পাখির দেখা মিলতো। বর্তমানে পাহাড় ও বনাঞ্চল উজাড় করে জলাশয়গুলো ভরাট করায় অতিথি পাখির আগমন কমে গেছে। এখন আর আগের মতো বন্যপশু পাখি ও দেখা যায় না। বুড়িচং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাকিয়া  আফরিন জানান, আমরা বিভিন্ন সময় নোটিস দিয়েছি। মোবাইল কোর্ট করেছি। তবুও রাতের আঁধারে দুর্বৃত্তরা মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কুমিল্লা শাখার সভাপতি ডা. মোসলেহ উদ্দিন বলেন, ‘প্রকৃতি বিনষ্ট করার কারণে অদূর ভবিষ্যতে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটবে এতে সন্দেহ নেই। আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে পরিবেশ রক্ষায় জেলা প্রশাসনের কাছে শীঘ্রই বিষয়টি জানাব’।  জেলা প্রশাসক জাহাংগীর আলম বলেন, ‘এ বিষয়ে শুনেছি। সংশ্লিষ্ট এলাকার ভূমি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছি মোবাইল কোর্ট করার জন্য। প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে দুর্বৃত্তরা মাটি কাটার কাজ করছে’।

 

সর্বশেষ খবর