বৃহস্পতিবার, ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

‘গাইড পড়লে পরীক্ষায় কমন পড়বে’

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

‘গাইড পড়লে পরীক্ষায় শতভাগ কমন পড়বে। লেখাপড়া ভাল হবে, ফলও ভাল হবে। তোমরা বুকলিস্ট অনুযায়ী গাইড বইগুলো কিনবে’। শিক্ষকের শেখানো এ বুলি আওড়াল সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার চৌবাড়ী ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র আইয়ুব আলী। একই কথা বলল, অপর শিক্ষার্থী ফাহিম ফাতেমা ও জান্নাতুল ফেরদৌস। অভিযোগ আছে, সরকারিভাবে গাইড বই নিষিদ্ধ হলেও স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা প্রকাশনা সংস্থার কাছ থেকে মোটা অংকের টাকার নিয়ে গাইড বই কিনতে বাধ্য করছেন শিক্ষার্থীদের। সরেজমিনে চৌবাড়ী ইসলামিয়া স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীর হাতে বুকলিস্ট। এতে ‘সহজ ভাষা শিক্ষা বাংলা ব্যাকরণ ও নির্মিত’, ‘নিউ বেসিক কমিউনিউকেটিভ ইংলিশ গ্রামার’, ‘সুপার নৈর্ব্যক্তিক ও ফেসবুক একের ভিতরে সব’ বইয়ের নাম রয়েছে। এছাড়া মৌখিকভাবে ‘পাঞ্জেরী ও লেকচার গাইড কিনতে’ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীদের বোঝানো হয়েছে এ গাইড পড়লে শতভাগ প্রশ্ন কমন পড়বে এবং ভাল ফল করা যাবে। উপজেলার প্রতিটি বিদ্যালয়ে এ রকম লিস্ট দিয়ে শিক্ষার্থীদের গাইড বই কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে জানা গেছে।

চৌবাড়ী ইসলামিয়া স্কুলের রকিব হাসান, ইমামুস সালিম জানায়, ‘স্যাররা আমাদের বুকলিস্ট দিয়েছেন আর পাঞ্জেরি অথবা লেকচার গাইড কিনতে বলেছেন। তাই আমার বইগুলো কিনছি’। অভিভাবক আকবর ও ইয়াকুব জানান, সরকার নিষিদ্ধ করলেও শিক্ষকরা ছাত্র-ছাত্রীদের গাইড বই কিনতে চাপ দিচ্ছেন। সহকারী শিক্ষক তোজাম্মেল হক ও তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘গাইড বই নিষিদ্ধ। প্রধান শিক্ষক ছাত্র-ছাত্রীদের বুকলিস্ট দিয়ে বইগুলো কিনতে বলেছেন। এতে আমাদের হাত নেই’। প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাদেরের ভাষ্য, ‘ছাত্র-ছাত্রীদের কোনো বুকলিস্ট দেওয়া হয়নি এবং গাইড কিনতেও বলা হয়নি। তারা কিভাবে বুকলিস্ট পেলো এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না’। কামারখন্দ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, স্কুলগুলোতে ছাত্র-ছাত্রীর গাইড বই কিনতে বলা হচ্ছে-এমন বিষয় জানা নেই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর