মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

বৃহত্তর ফরিদপুরে ‘অবৈধ’ ইটভাটার ছড়াছড়ি

কামরুজ্জামান সোহেল, ফরিদপুর

বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চলে গড়ে উঠেছে নতুন নতুন ইটাভাটা। ফলে প্রতিবছর হারাতে হচ্ছে বিপুল পরিমাণ জমি। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অবাধে ব্যবসা করে যাচ্ছেন ভাটা মালিকরা। সংরক্ষিত ও আবাসিক এলাকা, স্কুল-কলেজ, কৃষি জমির তিন কিলোমিটারের মধ্যে ভাটা নির্মাণ করা যাবে না, সরকারের এমন নির্দেশনা থাকলেও বাস্তবে ফরিদপুরে এর প্রতিফলন নেই। ফরিদপুর জেলা পরিবেশ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, বৃহত্তর ফরিদপুরের পাঁচ জেলায় ইটভাটার সংখ্যা ৩৭৭টি। গত দুই বছরেই হয়েছে ৮২টি, যার সবকটি ফসলি জমিতে। ফরিদপুর অঞ্চলের পরিবেশ অধিদফতরের উপ-পরিচালক লুত্ফর রহমান জানান, ফরিদপুরের ১১৬টি ইটভাটর মধ্যে অনুমোদন দুটির, গোপালগঞ্জে ৫২টির মধ্যে ১০টির, মাদারীপুরে ৭২টির মধ্যে ৯টির এবং রাজবাড়ীতে ৭৬টির মধ্যে ৪১টির অনুমোদন নেই। মামলাজনিত কারণে এগুলোর অনুমমোদন দেওয়া হয়নি। ভাটার সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে ফসলি জমি কমছে এমন প্রশ্নের উত্তরে এই কর্মকর্তা জানান, এক ফসলি জমির ক্ষেত্রে ইটভাটা তৈরির অনুমোদন দিলেও দুই বা তিন ফসলি জমি ক্ষেত্রে কোনোভাবেই দেওয়া হয় না। জানা যায় শুধু ফরিদপুরেই গত তিন বছরে নতুন ইটভাটা হয়েছে ২৯টির বেশি। যার অধিকাংশ ফসলি জমিতে। এই সব ভাটার নির্গত ধোঁয়া ও ছাই থেকে হচ্ছে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। এলাকাবাসী আক্রান্ত হচ্ছেন নানা রোগে। ফরিদপুর শহরতলীর সিঅ্যান্ডবি ঘাট এলাকার কলেজছাত্র আবুল হাসান জানান, তার বাড়ির পাশে (একশ গজের মধ্যে) রয়েছে একটি ভাটা। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রতি বছরই মালিক ফসলি জমি ক্রয় করে ভাটার পরিধি বৃদ্ধি করছেন’। একই এলাকার গৃহিণী সুলতানা বেগম বলেন, ‘ভাটার ধোঁয়া ও কয়লা পুড়ানোর গন্ধে আমাদের বসবাস করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। ছেলে-মেয়েদের ইতিমধ্যে শ্বাসকষ্ট দেখা দিয়েছে। ফরিদপুর কৃষি সমপ্রসারণ উপ-পরিচালক কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, ‘প্রতি বছরই ভাটার সংখ্যা বাড়ছে। এতে কৃষি জমির ওপর প্রভাব পড়ছে। ইটভাটা তৈরির সরকারি আইনের আরও বেশি প্রয়োগ হওয়া দরকার’। ফরিদপুরে জেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘আমাদের সমিতিভুক্ত যেসব ভাটা রয়েছে— সেগুলোর প্রতিটি পরিবেশ আইন মেনে চলে’। অবৈধ ভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের কাছে দাবি জানান তিনি।

সর্বশেষ খবর