রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

তিন ফসলি জমি লোকালয়ে ড্রাম চিমনির ইটভাটা

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

চারদিকে ফসলি জমি আর বাড়িঘর। মাঝখানে তিনটি অবৈধ ড্রাম চিমনির ইটভাটা। এ দৃশ্য কুষ্টিয়া সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের। এ তিনটি ভাটার মধ্যে দুটি কয়েক বছর আগের। একটি এ বছর স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিদিন একেকটি ভাটায় ৪০০ মণ কাঠ পোড়া হয় বলে জানিয়েছেন শ্রমিকরা। ভাটার কারণে পার্শ্ববর্তী খেতের ফসল উৎপাদন কমে গেছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। মহাসড়ক ঘেঁষে ভাটাগুলো নির্মিত হলেও নজরে আসছে না কারোরই।

জানা যায়, হরিণারায়ণপুর ইউনিয়নের শান্তিডাঙ্গা আবদালপুর গ্রামের বসির উদ্দিন, ফজলুর রহমান স্বাধীন ও লক্ষ্মীপুর গ্রামের আলী হোসেন ভাটা তিনটির মালিক। ইটভাটা করতে জেলা প্রশাসনের লাইসেন্স ও পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র থাকা বাধ্যতামূলক হলেও এ তিন ভাটা মালিকের কোনোটাই নেই। মালিকরা বলেন, ‘ভাটা পরিচালনার জন্য কোনো অনুমতি তাদের নেই।’ তিন ফসলি জমিতে পরিবেশ অধিদফতরের অনুমতি ছাড়াই ভাটা স্থাপনের ব্যাপারে বলেন, ‘আদালতে আমাদের রিট আছে’। কাঠ পোড়ানো ঠিক হচ্ছে না স্বীকার করে বলেন, ‘আইন মেনে এ দেশে কিছু হয় না। আর আইন মানতে গেলে তো ভাটা চালানো যাবে না।’ সরেজমিন দেখা যায়, দুটি ভাটার চারপাশে কৃষকরা সরিষাসহ অন্য রবি ফসল বুনেছেন। পড়ে থাকা জমিতে বোরো রোপণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন কেউ কেউ। স্থানীয় কৃষক আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘ভাটার ছাইয়ের কারণে মাঠে ফসল ঠিকমতো হয় না। ফসলের গাছ কালো হয়ে যায়। বাসাবাড়িতেও ছাই এসে পড়ে। ছেলেমেয়েদের ক্ষতি হয়।’ জানা গেছে, লক্ষ্মীপুরের এ এলাকা ছাড়াও সদর উপজেলায় ড্রাম চিমনির আরও ১০-১৫টি ভাটা রয়েছে। যদিও প্রায় ১০ বছর আগে ড্রাম চিমনির ভাটা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সেলিম হোসেন বলেন, ‘ইটভাটা স্থাপন করতে হলে তাদেরও মতামতের প্রয়োজন আছে। তবে কুষ্টিয়ায় আসার পর এ ধরনের কোনো সভায় তিনি ডাক পাননি’। ইউএনও জুলিয়া সুকায়না বলেন, ‘অবৈধভাবে কেউ ইটভাটা স্থাপন করে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ কুষ্টিয়া পরিবেশ অধিদফতরের কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, ড্রাম চিমনির মালিকরা আদালতে একটি রিট করেছেন। রিটের কপি খুলনায় পাঠানো হয়েছে। রিটে কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো ও তিন ফসলি জমিতে ভাটা স্থাপনের বিষয়ে নির্দেশনা আছে কিনা জানতে চাইলে বলেন, ‘এ ধরনের কোনো পয়েন্ট নেই’।

সর্বশেষ খবর