শুক্রবার, ১৩ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

‘কেতাবে বন্দী’ ক্যাথল্যাবসহ ২৪ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

সৈয়দ নোমান, ময়মনসিংহ

আড়াই বছর আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মো. নাসিম ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে পরিদর্শনে এসে ‘ক্যাথল্যাব’ (এনজিওগ্রাম, হৃৎপিণ্ডের ব্লকে রিং পরানোর বিশেষায়িত বিভাগ) দেওয়ার আশ্বাস দেন। এরও দুই বছর পর, গত ফেব্রুয়ারিতে ‘কাগজে-পত্রে’ মিলে ক্যাথল্যাবসহ আরও ৪টি সরঞ্জামের আশ্বাস। কিন্তু এর পাঁচ মাস পরও এখনো ‘কেতাবে বন্দী’ হয়ে আছে ক্যাথল্যাবসহ ২৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকার প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি।

মমেক হাসপাতাল সূত্র বলছে, ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ময়মনসিংহ মেডিকেলে একটি ক্যাথল্যাব মেশিন, ৮টি ডায়ালাইসিস মেশিন, একটি করে অত্যাধুনিক সিটি স্ক্যান মেশিন ও এমআরআই মেশিন ২৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয়ে বরাদ্দ হয়। কিন্তু ওই অর্থবছর পেরিয়ে গেলেও বরাদ্দকৃত মেশিনগুলো আসেনি হাসপাতালটিতে। এতে করে বৃহত্তর ময়মনসিংহের অনেক হৃদরোগী শুধুমাত্র ক্যাথল্যাব মেশিনের অভাবে সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। জানা যায়, ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত সরকারের সেবামূলক বৃহৎ এ প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে এক হাজার শয্যার হাসপাতাল। হাসপাতালটিতে ‘কার্ডিওলজি’ (হৃদরোগ) বিভাগ থাকলেও নেই ক্যাথল্যাব। অথচ হৃদরোগ বিভাগে ক্যাথল্যাব জরুরি একটি সেবার মাধ্যম বলে পরিচিত। এ ছাড়াও কোনো রোগীকে তাত্ক্ষণিক এনজিওগ্রাম করানোর প্রয়োজন পড়লেও নেই আধুনিক যন্ত্রপাতি।  হৃদরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক এম এ বারী বলছেন, ক্যাথল্যাব চালু থাকলে এনজিওগ্রাম করে যাদের ছোট দু-একটা ব্লক আছে তাদের ডায়গনেসিস করা যেত মাত্র দুই হাজার টাকায়। অথচ বেসরকারি কোনো হাসপাতালে খরচ হয় প্রায় ২৫ হাজার টাকা। অন্যদিকে রিং পরানো হলে খরচ হয় ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা। আর বেসরকারি হাসপাতালে ৬০ থেকে ১ লাখ টাকা। দেশের বাইরে আরও বেশি। শুধু হৃদরোগ বিভাগেই নয় কিডনি রোগীদের জন্য ডায়ালাইসিস (শরীরের বর্জ্য অথবা ক্ষতিকর কোনো জিনিস বের করার) মেশিন, রেডিওলজি বিভাগে সিটিস্ক্যান ও যে কোনো রোগ নির্ণয়ে এমআরআই মেশিন স্থাপনের কথা থাকলেও গত পাঁচ মাসেও  জোটেনি। হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাছির উদ্দীন আহমেদ বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সেবা দেওয়ার সদিচ্ছা থাকলেও সম্ভব হচ্ছে না। মৌলিক কিছু যন্ত্র বরাদ্দ হলেও ভাগ্যে জোটেনি। আমাদের পক্ষ থেকে বার বার তাগাদা দেওয়া হয়েছে। হাসপাতাল সূত্র জানায়, ময়মনসিংহ অঞ্চলের ৬ জেলার মানুষের চিকিৎসার জন্য একমাত্র আশ্রয়স্থল এই হাসপাতাল। এ ছাড়াও সিলেট, সুনামগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, গাজীপুরের একাংশের লোকও প্রতিদিন চিকিৎসার জন্য এ হাসপাতালেই আসেন।

সর্বশেষ খবর