রবিবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা
রাজবাড়ী

গলা কেটে হত্যা আতঙ্ক

কামরুজ্জামান সোহেল, রাজবাড়ী

রাজবাড়ী জেলাজুড়ে গলা কেটে হত্যা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গত পনের দিনে একটি শিশু ও চার নারীকে গলা কেটে হত্যা করা এবং এসব হত্যায় জড়িত কাউকে পুলিশ ধরতে না পারায় এই আতঙ্ক তৈরি হয়। তবে হত্যায় জড়িত সন্দেহে ছয়জনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে তেমন কোনো তথ্য উদঘাটন করা যায়নি। গলা কেটে সব হত্যাকাণ্ড একই ধরনের। তবে এসব খুনের পেছনে একই চক্র কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পনের দিনে চারজনকে গলা কেটে খতম করাটা ভাবিয়ে তুলেছে পুলিশ প্রশাসনকে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার রাতে সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের বারবাকপুর গ্রামে গলা কেটে হত্যা করা হয় হাজেরা বেগম (৫২) নামের এক নারীকে। হাজেরা বেগমের পুত্রবধূ স্বপ্না জানান, বৃহস্পতিবার রাতে খাবার খেয়ে তিনি তার ছেলে আর শাশুড়ি একই ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঘুম ভেঙে গেলে তিনি দেখতে পান ঘরের আলো নেভানো এবং তার শাশুড়ির শরীরে রক্ত। তিনি চিৎকার দিলে পাশের ঘরে থাকা শ্বশুর আর অন্যরা ছুটে এসে দেখেন খাটের ওপর হাজেরা বেগমের গলা কাটা লাশ। লাশের শরীরে বেশকিছু জখমের চিহ্ন। তবে কী কারণে হাজেরা বেগমকে হত্যা করা হয়েছে তা তার পরিবারের সদস্যরা জানাতে পারেনি। এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। এর আগে ৩ আগস্ট সদর উপজেলার মূলঘর ইউনিয়নের পশ্চিম মূলঘর গ্রামে দাদি ও নাতনিকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। তারা হলেন— দাদি শাহিদা বেগম ও নাতনি লামিয়া আক্তার। শাহিদা বেগমের ছেলে শহিদুল ইসলাম জানান, হত্যার আগে মাকে ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় শহিদুল বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে রাজবাড়ী থানায় মামলা করেন। পুলিশ আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের সন্দেহভাজন হিসেবে দুজনকে আটক করে। দাদি ও নাতনিকে গলা কেটে হত্যার পর একই কায়দায় গত ৮ আগস্ট বানিবহ ইউনিয়নের আটদাপুনিয়া গ্রামে আদুরী বেগম নামের এক নারীকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আদুরীর স্বামী মিজানুর রহমান অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় পুলিশ চারজনকে আটক করে। রাজবাড়ী প্রেস ক্লাবের সভাপতি খান মোহাম্মদ জহুরুল হক বলেন, গলা কেটে হত্যার ঘটনাগুলোয় জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে নারীদের গলা কেটে হত্যার ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ বেশ আতঙ্কিত। এসব খুনে যারা জড়িত তাদের দ্রুতই আইনের আওতায় আনা দরকার। রাজবাড়ী জেলা মহিলা পরিষদের সভানেত্রী লাইলী নাহার বলেন, আমরা উদ্বিগ্ন্ এবং আতঙ্কিত। অতি দ্রুত ঘাতকদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তি দিতে হবে। সদর থানার ওসি মো. তারিক কামাল বলেন, হাজেরা হত্যার ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে। পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি বলেন, আগের তিনটি হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে পুলিশ রহস্য উদঘাটনে কাজ করে যাচ্ছে। ওই তিনটি খুনের ঘটনায় ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। তবে এসব ঘটনার হোতাদের আটকের চেষ্টা চলছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর