রবিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

মেহেরপুরে বাড়তি টাকা ছাড়া মেলে না পাসপোর্ট

মেহেরপুর প্রতিনিধি

মেহেরপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে চলছে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি। কাগজপত্র ঠিক থাকলেও বাড়তি টাকা ছাড়া এখানে পাসপোর্ট মেলে না। যারা অতিরিক্ত অর্থ দিতে অনীহা প্রকাশ করেন তাদের হয়রানির শেষ থাকে না। সম্প্রতি জেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়ে কয়েক দালালকে জরিমানা করেছে। কিন্তু কিছু কর্মকর্তা অনিয়মে জড়িত থাকায় বন্ধ হয়নি গ্রাহক হয়রানি। সরকারি নিয়মানুযায়ী ২০ দিনের মধ্যে একটি ডিজিটাল পাসপোর্ট বানানোর ফি তিন হাজার ৪৫০ ও অতি জরুরি (১২ দিনের মধ্যে) ফি ছয় হাজার ৯০০ টাকা। মেহেরপুর অফিসে একটি পাসপোর্ট পেতে সব মিলিয়ে গুনতে হয় ১২ হাজার টাকা। আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস মেহেরপুরের সহকারী পরিচালক গোলাম ইয়াছিনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলবেন না বলে ফোন কেটে দেন। জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোসেন জানান, তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, পাসপোর্টের জন্য কেউ সরাসরি আবেদন জমা দিলে সে আবেদনপত্রে যেকোনোভাবে ত্রুটি বের করা হয়। বার বার আবেদনের পর গ্রহণ করলে তা পড়ে থাকে মাসের পর মাস। পুলিশ প্রতিবেদন পেতেও লাগে মোটা অঙ্কের অর্থ। সব মিলিয়ে একটি পাসপোর্ট পেতে গুনতে হয় ১২ হাজার টাকা। অনেকে ঝামেলা এড়াতে এ টাকা দিয়েই পাসপোর্ট করেন।

জানা যায়, মেহেরপুর অফিসে প্রতিদিন গড়ে ১০০-১৫০টি আবেদন জমা ও পাসপোর্ট সরবরাহ হয়। প্রতি পাসপোর্টে বাড়তি এক হাজার টাকা হিসাবে দৈনিক আদায় হয় প্রায় দেড় লাখ টাকা। এ অর্থ পদ-পদবি অনুযায়ী বণ্টন হয়।

অভিযোগ আছে, গ্রাহকরা শুধু অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীর হাতেই হয়রানির শিকার হন না। দালালদের হাতেও নাজেহাল হন তারা। দালালরা আবেদনকারীদের জিম্মি করে প্রতিটি পাসপোর্ট দেওয়ার নামে হাতিয়ে নিচ্ছে ৮-১০ হাজার টাকা। একজন পাসপোর্ট আবেদনকারী জানান, তার বাবা ক্যান্সারের রোগী। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জরুরি ভারত নিয়ে যেতে হবে। বৈধভাবে অনেকবার আবেদন করেছি। আবেদন গ্রহণ না করায় উপায় না দেখে অতিরিক্ত টাকা দিতে বাধ্য হই। ওই গ্রাহক আরও জানান, পাসপোর্টের বিষয়ে খোঁজ নিতে এসে এ অফিসে কর্মরত বিপ্লব হোসেনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘৮০০০ টাকা দিলে পাসপোর্ট গ্রাহককে কিছু করতে হবে না। এমনকি পুলিশের ভ্যারিফিকেশনও লাগবে না। সরাসরি ফিঙ্গার নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর