মঙ্গলবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

পাহাড়ে মিলেমিশে বন সাবাড়

বান্দরবান প্রতিনিধি

পার্বত্য জেলা বান্দরবানের বনবিভাগ-চোরাকারবারী মিলেমিশে কেটে সাবাড় করছে রিজার্ভ বন। আলীকদম এলাকার ৪০ একরের এ বনাঞ্চলে দুর্লভ চম্পা ফুল, গর্জন, বৈলামসহ নানা প্রজাতির গাছ রয়েছে।

পাড়া কার্বারী দিরি ম্রো জানান, বনের পাশে পাড়ায় ক্রামা মন্দির নির্মাণ করে দেওয়ার কথা বলে গাছ পাচারকারীরা এলাকাবাসীর কাছ থেকে একটি আবেদনে স্বাক্ষর নেয়। পরে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ওই আবেদন ব্যবহার করে গাছ কেটে নিচ্ছে। স্থানীয়দের ভাষ্য, আলীকদম উপজেলার গাছ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী ও কক্সবাজারের চকরিয়ার কুতুব সওদাগর মিলে রিজার্ভ বনটি উজাড় করছেন। তাদের নিয়োগকৃত শ্রমিকরা পেট্রোলচালিত করাত দিয়ে প্রতিদিন গাছ কেটে নিচ্ছে। আগে হস্তচালিত করাত ব্যবহার করলেও সময় বেশি লাগায় এখন পেট্রলচালিত করাত দিয়ে গাছ কাটছে। সরেজমিনে দেখা যায়, বড় বড় গাছ কেটে বনের ভিতর স্তূপ করে রাখা হয়েছে। ট্রাকে করে সুবিধামতো সময়ে বিশেষ করে রাতে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এ গাছ। অভিযুক্ত মোহাম্মদ আলী জানান, যে এলাকা থেকে গাছ কাটছেন তা রিজার্ভ নয়। সেখানে জোত পারমিটের মাধ্যমে বৈধভাবে গাছ কাটা হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, দিরি পাড়া থেকে গাছগুলো আমতলি এলাকায় জমা করে সেখান থেকে চকরিয়া নেওয়া হয়। তাছাড়া প্রায়ই রাতের আঁধারে ট্রাকে সরাসরি চকরিয়ায় পাচার করা হচ্ছে পাড়া রিজার্ভের মূল্যবান গাছ। আলীকদম সদর ইউপি সদস্য আবদুল মতিন জানান, দীর্ঘদিন থেকে দিরি পাড়ার মূল্যবান গাছগুলো পাচার হচ্ছে। আলীকদম-চকরিয়া সড়কের বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট থাকার পরও রাতের বেলা পাচারকারী চক্রটি গাছ সরিয়ে ফেলছে। পাড়ার লোকজন জানান, বাধা দিলে পাচারকারীরা হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। লামা বন বিভাগের তৈন রেঞ্জের কর্মকর্তা শামসুল হুদা জানান, গত বৃহস্পতিবার দিরি পাড়ায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ৫০০ ঘনফুট কাঠ জব্দ করা হয়েছে। বন বিভাগের কয়েকটি চেকপোস্ট থাকার পরও পাচারের সময় ট্রাকগুলো কেন আটক করা হয় না জানতে চাইলে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি এ কর্মকর্তা। লামার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন আহম্মেদ জানান, দিরি পাড়া এলাকা থেকে কাঠ পাচারের বিষয়টি তার জানা নেই। সরেজমিন দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

সর্বশেষ খবর