শিরোনাম
বুধবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

জলে ভাসা জীবন!

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

পানির উপরই বসতি। ভেসে ভেসেই এক ঘাট থেকে আরেক ঘাটে যাওয়া। হাওরে চলার জন্য ইঞ্জিনচালিত ট্রলারই সঙ্গী তাদের (ধুনকর)। থাকা, খাওয়া থেকে শুরু করে দৈনন্দিন কাজকর্ম এই ট্রলারেই হয়ে থাকে। মূল কাজ হয় ট্রালারের ছাদে।

তুলা ধুনা করে লেপ, তোষক, জাজিম তৈরির কারিগরই ধুনকর। সাধারণত বাজারে বা বাড়িতে এ কাজটি করা হয়। ব্যতিক্রম পাওয়া গেল কিশোরগঞ্জের হাওরে। ইটনা উপজেলার ভাটি রাজিবপুর শেখ পাড়ার হযরত আলী, আব্দুল মন্নাফ, শাহীন আহমেদ ও আয়েত আলী ৭-৮ বছর আগে হাওরে ট্রলারে ভেসে ভেসে এ কাজটি করে যাচ্ছেন। সম্প্রতি মিঠামইন উপজেলার বজকপুর গ্রামে পাওয়া যায় তাদের। আয়েত আলী জানান, একটি জাজিম তৈরি করতে তারা ছয় হাজার টাকা নেন। আর তোষক ১ হাজার ৫০০ এবং লেপ তৈরিতে ১ হাজার ২০০ টাকা নিয়ে থাকেন। এ কাজে খরচ বাদে প্রতিমাসে ২০-২৫ হাজার টাকা লাভ হয়। এ দিয়েই তাদের সংসারের বেশিরভাগ খরচ চলে। হযরত আলী জানান, শুধু কিশোরগঞ্জের হাওরেই নয়, এ কাজের জন্য সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা ও হবিগঞ্জেও তাদের ডাক পড়ে। দীর্ঘদিন ধরে এ কাজ করায় বিভিন্ন এলাকায় তাদের পরিচিতি বেড়েছে। অনেকেই মোবাইল ফোনে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন  কাজের জন্য। পরিবার পরিজন ছেড়ে হাওরের পানিতে ভেসে চলা জীবন অনেকটা কষ্টের বলে জানান তারা। এরপরও জীবিকার তাগিদেই এমন পেশা বেছে নিয়েছেন। কিছুদিন পর পর পর্যায়ক্রমে চারজনের মধ্যে কেউ একজন বাড়িতে চলে যান পরিবারের কাছে। পানিতে ভেসে চলা জীবনে প্রতি ঘাটেই তাদের সঙ্গে পরিচয় হয় নতুন মানুষের সঙ্গে। আবার হারিয়েও যায় অনেকে। এভাবেই ঘাটে ঘাটে ভেসে চলে যায় ধুনকরের দিন-মাস-বছর।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর