রবিবার, ৭ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

দুর্যোগে ঝুঁকিতে লাখো মানুষ

সুন্দরবনে নেই পর্যাপ্ত আশ্রয় কেন্দ্র

বাগেরহাট প্রতিনিধি

বঙ্গোপসাগরে জলোচ্ছ্বাস ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় জেলে, বনজীবীসহ উপকূলবাসীর একমাত্র ভরসা ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র। নব্বইয়ের দশকে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কারিতাসের সহায়তায় সুন্দরবনে পাঁচটি সাইক্লোন শেল্টার নির্মিত হয়, যা ছিল চাহিদার তুলনায় অপর্যাপ্ত। এ পাঁচটির মধ্যে আবার একটি আশ্রয় কেন্দ্র ব্যবহার-অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় পর্যাপ্ত আশ্রয় কেন্দ্র না থাকায় বর্ষা মৌসুমে প্রাকৃতিক দুর্যোগকালে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় থাকেন জেলে, বনজীবী, পর্যটকসহ লক্ষাধিক মানুষ। সুন্দরবন বিভাগ ও জেলেদের সূত্রে জানা যায়, সুন্দরবন ও সমুদ্রে বছরের ছয়-সাত মাস বনজ সম্পদ, মত্স্য আহরণ ও শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতকরণ কাজে নিয়োজিত থাকেন হাজার হাজার জেলে। সিডর, আইলা, মহাসেনের মতো ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাসের মধ্যেও জীবন-জীবিকার জন্য লড়তে হয় তাদের। দুর্যোগের সময় জেলেদের সমুদ্রতীরবর্তী এলাকায় মাথা গোঁজার ঠাঁই থাকে না। পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের আওতায় গত দুই দশকে গড়ে ওঠেনি কোনো আশ্রয় কেন্দ্র। পূর্ব সুন্দরবনের দুবলার চর, শেলার চর, মাঝের চর, মেহের আলীর চর ও আলোর কোলে নব্বইয়ের দশকে তৈরি পাঁচটি আশ্রয় কেন্দ্রে জায়গা হয় মাত্র ৩ হাজার লোকের। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় এর একটি প্রায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। সুন্দরবন বিভাগ আরও জানায়, প্রতি বছর ইলিশ আহরণ ও শুঁটকি মৌসুমে সুন্দরবন ও বঙ্গোপসাগর এলাকার লক্ষাধিক জেলের কাছ থেকে সরকারের কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করে। অথচ দুর্গম এ অঞ্চলে নেই জেলে-বনজীবীদের একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই। সুন্দরবনসংলগ্ন শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের মাছ ব্যবসায়ী আওয়াল জোমাদ্দার জানান, জলোচ্ছ্বাসের সময় জেলেরা নিরুপায় হয়ে বনের ভিতর বিভিন্ন গাছে আশ্রয় নেন। জেলেদের জন্য সাগরপাড়ের জেলেপল্লীগুলোয় কমপক্ষে ৫০টি আশ্রয় কেন্দ্র স্থাপন করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। শরণখোলা মত্স্যজীবী সমিতির সভাপতি আবুল হোসেন জানান, জেলেদের কাছ থেকে সরকার মোটা অঙ্কের রাজস্ব আদায় করলেও তাদের নিরাপত্তার তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই সমুদ্র-চরাঞ্চলে।

সর্বশেষ খবর