রবিবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

রংপুরে মামলার জালে বিএনপির ১০ হাজার নেতা-কর্মী

শাহজাদা মিয়া আজাদ, রংপুর

রংপুরে মামলার জালে বিএনপির ১০ হাজার নেতা-কর্মী

রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় পুলিশের দায়ের করা মামলার জালে আটকা পড়েছেন বিএনপির ১০ হাজার নেতা-কর্মী। মামলার কারণে গ্রেফতার আতঙ্কে এসব নেতা-কর্মী প্রকাশ্যে দলীয় কর্মসূচিতে অংশও নিতে পারছেন না।

জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচনের পর বিএনপি-জামায়াত জোট দেশব্যাপী টানা হরতাল ও অবরোধের ডাক দেয়। এ সময় হরতালের নামে নাশকতা সৃষ্টি, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও যানবাহনে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে বিএনপির ১০ হাজার ৮২ জন নেতা-কর্মীর নামে ১১০টি মামলা করে পুলিশ। এর মধ্যে দ্রুত বিচার আইনে দায়ের করা হয় ২৭টি মামলা। আসামি করা হয় ১ হাজার ১৩৪ জনকে। এখন পর্যন্ত এসব মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে ১ হাজার ১১৫ জন নেতা-কর্মীকে।  জানতে চাইলে পুলিশের রংপুর রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) দেবদাস ভট্টাচার্য বলেন, আসামিদের গ্রেফতারে জোর তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। তবে যারা গা-ঢাকা দিয়েছে তাদেরই গ্রেফতারে বিলম্ব হচ্ছে।

ডিআইজির দফতর সূত্রে জানা গেছে, ঠাকুরগাঁও জেলায় ৬ হাজার ৩০০ নেতা-কর্মীর নামে মামলা করা হয় ১৯টি। এর মধ্যে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রায়কে কেন্দ্র করে ২৮ ফেব্রুয়ারি হরতালে সহিংসতার ঘটনায় ৬ জনের মৃত্যু হলে, ৫২ জনের নাম উল্লেখ করে ১ হাজার ৬০০ নেতা-কর্মীকে আসামি করে মামলা করা হয়। দিনাজপুরে ৮৭ জন নেতা-কর্মীর নামে মামলা করা হয় ২টি। জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদকসহ গ্রেফতার করা হয় ১৫ জনকে। পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া থানায় বিএনপির ১৪ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়। রংপুরে ২০০ নেতা-কর্মীকে আসামি করে মামলা করা হয় ৪টি। গ্রেফতার করা হয়েছে ৬৩ জনকে। নীলফামারীতে ১২২ জনের নাম উল্লেখ করে ২০০ নেতা-কর্মীর নামে মামলা করা হয় তিনটি। গ্রেফতার করা হয়েছে ১২২ জনকে। কুড়িগ্রামের উলিপুর, ফুলবাড়ী ও রাজীবপুর থানায় দায়ের করা ৩টি মামলায় আসামি করা হয় ৩২৬ জন নেতা-কর্মীকে। গ্রেফতার করা হয়েছে ১৬৫ জনকে। লালমনিরহাটে গাড়ি ও দোকানপাট ভাঙচুর, পুলিশকে মারধর ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে দায়ের করা ১৬ মামলায় বিএনপির ২২১ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়। গ্রেফতার করা হয় ১০৪ জনকে। গাইবান্ধায় বিএনপি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে দায়ের করা ৩৫টি মামলায় ১ হাজার ৬০০ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়। গ্রেফতার করা হয়েছে ৩৬১ জনকে। এ ছাড়া কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও, গাইবান্ধা ও দিনাজপুর জেলায় দ্রুত বিচার আইনে মামলা করা হয় ২৭টি। এসব মামলায় বিএনপির ১ হাজার ১৩৪ জন নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়। গ্রেফতার করা হয় ৩২৫ জনকে।

বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, সরকারের ইন্ধনে পুলিশ অন্যায়ভাবে এসব মামলা করেছে। কেন্দ্রীয় শীর্ষনেতাসহ রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের নেতা-কর্মীর মুক্তি এবং দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে এ দুটি বিভাগে সকাল-সন্ধ্যা হরতালও পালন করা হয়েছে। কোনো ফল হয়নি। তাই নির্বাচনের আগে নেতা-কর্মীদের মুক্তি ও গ্রেফতার হয়রানি বন্ধ করা না হলে সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া সম্ভব নাও হতে পারে।

সর্বশেষ খবর