শনিবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

গৌরনগর এখন আতঙ্কের জনপদ!

প্রায়ই ঘটছে হামলা-লুট

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

দুটি খনের ঘটনা ঘিরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার গৌরনগর গ্রামটি আতঙ্কের জনপদে পরিণত হয়েছে। প্রায়ই ঘটছে হামলা-ভাঙচুর-লুটপাট। ভয়ে প্রতিদিনই গ্রাম ছাড়ছে কোনো না কোনো পরিবার। মাঠে কাজ করতে না পারায় পরিত্যক্ত পড়ে আছে বহু ফসলি জমি। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, যে কয়েক লোক এখনও গ্রামে অবস্থান করছেন তাদের চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ। কয়েক প্রবীণ ব্যক্তি জানান, ১৯৮৬ সালে স্থানীয় সরকার ও আজইরা গোষ্ঠীর সংঘর্ষে আজইরা গোষ্ঠীর আলী হোসেন মারা যান। এ নিয়ে গ্রামে অশান্তির শুরু। ৭-৮ বছর পর ওই বিষয়টির নিষ্পত্তি হয়। ২০১১ সালে খুন হন সরকার গোষ্ঠীর রবিউল্লাহ। এ নিয়ে মামলা-মোকাদ্দমা চললেও জনমনে কিছুটা হলেও স্বস্তি ছিল। সর্বশেষ গত ২৯ সেপ্টেম্বর স্থানীয় চকবাজারে হামলায় আজইরা গোষ্ঠীর জয়নাল আবেদীন ও দুলাল মিয়া আহত হন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় শতাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়। গ্রেফতার আতঙ্কে সরকার গোষ্ঠীর লোকজন বাড়ি ছাড়তে শুরু করে। এলাকার শান্তি বজায় রাখতে গ্রামের দুই প্রান্তে স্থাপন করা হয় অস্থায়ী দুটি পুলিশ ক্যাম্প। জোড়া খুনের এক মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও লোকজন ফিরতে পারছে না গ্রামে। প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে প্রতিনিয়ত চলছে হামলা-লুটপাট। শতাধিক পরিবার অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। হামলা-লুটের ঘটনায় সরকার গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে মামলা হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে গ্রামের কয়েক মহিলা জানান, তাদের পরিবারের পুরুষরা বাড়ি আসতে পারছে না। আমরাও আতঙ্কে আছি। ছেলে-মেয়ের পড়ালেখা ব্যাহত হচ্ছে। গ্রামে অবস্থানকারী নারী-বৃদ্ধ-শিশুদের দিন কাটছে আতঙ্কে। ভাঙচুরের ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে বাড়িঘরগুলো। সরকার গোষ্ঠির আবদুল খালেক বলেন, ‘প্রতিপক্ষের লোকজন নির্বিচারে বাড়িঘরে হামলা-লুুটসহ নানা অপরাধমূলক কার্যক্রম চালচ্ছে। আমরা এলাকা ছেড়ে অন্যত্র অবস্থান করতে বাধ্য হচ্ছি।’ আজইরা গোষ্ঠির সরদার আব্বাস বলেন, এই অবস্থা থেকে আমরাও মুক্তি চাই। হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’ বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুরের বিষয়ে তিনি বলেন, খুনের খবর গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে কিছু লোক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। নবীনগর থানার ওসি জানান, হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে দুইটি পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। লুটপাটের ঘটনায় ৪-৫ জনকে আটক করে মামলা দিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর